গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
গোয়াইনঘাট উপজেলায় মসজিদের জমি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির বৈঠক চলাকালে দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত আরও অর্ধশত লোকজন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের সালুটিকর বাজার এলাকায় এঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিদ্বয় হলেন, মিত্রিমহল গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে মনাই মিয়া (২৬) ও আজিজুল ইসলামের ছেলে রুমেল আহমদ (২৮)। আহতদের মধ্যে কয়েক জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পরপরই ঘটনাস্থল থেকে একটি এক নলা বন্দুক উদ্ধার করলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সালুটিকর বাজার মসজিদের দখলে থাকা প্রায় পাঁচ শতক জমি নিয়ে গত শুক্রবার মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিত্রিমহল গ্রামের আব্দুস সোবহান ও ইউনিয়ন বিএনপি নেতা বহর গ্রামের জামাল উদ্দিন, ফখর উদ্দিন ও ফয়েজ আহমদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এ বিষয় নিয়ে গতকাল শনিবার সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী, নন্দিরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান আমিরুলসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি সমাধানের জন্য মিত্রিমহল গ্রামে যান। আলোচনা চলাকালীন সময়ে বাক বিতান্ডার এক পর্যায়ে মিত্রিমহল ও বহর গ্রামের লোকজেনর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও বহর গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন ও তার সহযোগীরা গুলি ছুঁড়ে। এতে মিত্রিমহল গ্রামের বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মনাই মিয়া ও রুমেল মারা যান।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাটের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী জানান, সালুটিকর বাজার মসজিদের কয়েক শতক জমি নিয়ে দু’গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে শনিবার সকালে তার উপস্থিতিতে বৈঠকে বসে দু’পক্ষ। বৈঠক চলাকালে দুই পক্ষের মত বিরোধ দেখা দিলে সংঘর্ষ বাঁধে।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) হিল্লোল রায় জানান, সালুটিকর বাজার মসজিদের যায়গা নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন নিহতদেও লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। একই সাথে ঘটনাস্থল থেকে একটি এক নলা বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান, পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, গোয়াইনঘাটের ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত, সহকারী পুলিশ সুপার মতিয়ার রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।