জেড.এম. শামসুল :
আজ ২৪ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানী নেতারা ঢাকা ত্যাগ করেন। বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রশ্নে আমরা মতৈক্যে পৌঁছেছি এবং আমি আশা করি প্রেসিডেন্ট এখন তা ঘোষণা করবেন। এদিকে ইয়াহইয়ার উপদেষ্টাদের সাথে বঙ্গবন্ধুর উপদেষ্টাদের বৈঠক হয়। সর্বসম্মতিক্রমে ইয়াহইয়া ও মুজিবের উপদেষ্টারা প্রেসিডেন্টের ঘোষণার একটা খসড়া তৈরি করেন। প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়া খানের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এম এম আহমদের দায়িত্ব ছিল খসড়াটি পরীক্ষা সাপেক্ষে চূড়ান্ত করার। কিন্তু ভুট্টো-ইয়াহইয়ার শেখানো কৌশল অনুযায়ী সুচতুর আহমদ কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ পশ্চিম পাকিস্তানে পালিয়ে যান। বঙ্গবন্ধু এ ঘটনায় বিস্মিত হন। তিনি নিজ বাড়ীর সামনে সংগ্রামী জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আন্দোলন নস্যাতের চক্রান্ত চলছে। আমার মাথা কেনার শক্তি কারো নাই। বাঙালির সঙ্গে আমি বেইমানী করতে পারবো না। জয় বাংলা থাকবে, ক্ষয় বাংলা করতে পারবো না। এদিন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তাল এ দিনে পাকিস্তান বাহিনীর জেনারেলরা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীর তাদের ক্র্যাক ডাউনের পরিকল্পনার দিক নির্দেশনা দেয়। এদিন চট্টগ্রাম থেকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রাম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের তৎকালীন সেক্টর কমান্ডার বাঙালি সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার এম আর মজুমদারকে। তার সঙ্গে আরো এক বাঙালি সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন আমিন আহমদ চৌধুরীকেও একই হেলিকপ্টারে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এদিন থেকে ঢাকার রাস্তায় গাছ ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করতে থাকে বাঙালিরা। সারাদিন রাজধানী উত্তাল থাকে মিছিলে মিছিলে। সমস্ত শহর মিছিলের নগরীতে রূপ নেয়। এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, বুলেট বেয়নেট আর রক্তচক্ষু নিয়ে বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না। বাঙালির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে স্বাধীন বাংলার স্বাধীনতাকামী মানুষের অধিকার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসুন।