দোয়ারাবাজার থেকে সংবাদদাতা :
দোয়ারাবাজারে ৬ বছরের শিশু কন্যাকে হত্যা করেছে এক পাষন্ড পিতা। বুধবার বিকালে উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের জলসী গ্রামে এ হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটে।
সরজমিন গেলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জলসী গ্রামের মৃত মকদ্দছ আলী মাস্টারের ৫ম পুত্র মামুনুর রশীদের সঙ্গে তার আপন ভাইদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে ভাইদের সঙ্গে বুধবার দুপুরে কথা কাটাকাটি হয়। অপর ভাইদের ফাঁসাতে প্রকাশ্যে তার শিশু কন্যা মাইশা (৬)-কে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে। মুহূর্তেই পাষন্ড পিতা মামুন বেপরোয়া হয়ে শিশু কন্যার হাত কেটে দেয়। মেয়েকে বাঁচাতে লোকজন এগিয়ে আসলে সে দা দিয়ে লোকজন কে ধাওয়া করে। এ দিকে তার স্ত্রী সিতারা বেগম ও শশুর আব্দুল হামিদ রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে ঘরে শুইয়ে রাখে। কেউ যাতে ঘরে ঢুকতে না পারে সে জন্য মামুন বারান্দায় দা হাতে নিয়ে বসে থাকে।
পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ওসমানী মেডিকেলে নেওয়ার পর বুধবার রাতেই শিশু কন্যা মাইশা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বুধবার বিকালে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ঘাতক পিতা মামুনুর রশীদকে আটক করেছে। এদিকে মামুনের স্ত্রী সিতারা বেগম ও তার শশুর পলাতক রয়েছে। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত শিশুর লাশ গ্রামে আসেনি।
উল্লেখ্য, ঘাতকের পরিবারের লোকজন জানান, মামুন দীর্ঘ দিন ধরে প্রবাসে থাকার সুবাদে তার স্ত্রী সিতারা বেগম এর বেপরোয়া চলাচল পরিবারের লোকজনের চোখে পড়ে। বছর দেড়েক ধরে মামুনের এক মামাতো ভাই একই গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর পুত্র মোহসিন সিতারা বেগমের বাড়ী ঘরে আসা যাওয়া করে। মামুনের স্ত্রীর সঙ্গে মিলে তার অপর ভাইদের জমিজমার বিরোধ সৃষ্টি করে মামলা মোকদ্দমা পর্যন্ত করে। দুবাই প্রবাসী মামুন ২০/২৫ দিন পূর্বে দেশে ফিরে স্ত্রীর কথায় আপন ভাই ভাতিজার সঙ্গে উঠেপড়ে লেগে থাকে। বুধবার সকালে জমিজমা ও গাছপালা নিয়ে তার অপর ভাইদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হলে এক পর্যায়ে সে তার নিজ কন্যাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি সুশীল রঞ্জন জানান, ঘাতক মামুন পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি দিয়েছে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বুধবার রাতে তার শ্বশুর বাড়ী থেকে দা ও খুনের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু করে সুনামগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।