কে.এম.লিমন গোয়াইনঘাট থেকে :
সিলেটের বৃহত্তম পাথর কোয়ারি জাফলং। এই কোয়ারি থেকে উত্তোলিত পাথর দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছরের মতো এবারের মৌসুমেও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সনাতন পদ্ধতিতে উত্তোলন করে শত কোটি টাকার পাথর মজুদ করেছেন। তবে এই পাথরগুলো নদী পাড়াপার নিয়ে বিপাকে রয়েছেন পাথর ব্যবসায়ীরা। পিয়াইন নদীর লামাপুঞ্জি থেকে এসব পাথর পারাপারের এক মাত্র মাধ্যম ছিলো একটি ছোট বেইলি ব্রীজ। গেলো কয়েক দিন আগেই এই ব্রীজটি ভেঙে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ব্রীজ ভাঙার পরপরই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পাথর পারাপার নিয়ে রয়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে তাদের। অনেক ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ নিয়ে পড়েছেন নানা বিড়ম্বনায়।
গতকাল সোমবার পিয়াইন নদীর লামাপুঞ্জি এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়,
জাফলংয়ের পাথরের মৌসুমকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই পাথর ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ নিয়ে ব্যবসায় নেমেছেন। এখানকার পাথর পরিবহনের জন্য শত শত ট্রাক কিস্তিতে কিনেন পরিবহন মালিকরা। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সিলেটে পাথর ব্যবসার মৌসুম। এ বছরও মূল ধারার পাথর ব্যবসায়ীরা সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করে লামাপুঞ্জি এলাকায় পাথরের স্তুপ করেছেন। কিন্তু পিয়াইন নদী পারাপারে সুব্যবস্থা না থাকায় সেই পাথর আটকে পড়ে আছে। বর্ষার আগে সে পাথর পরিবহন করতে না পারলে ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।
জাফলং বল্লাঘাট পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতি বছরের মৌসুমে আমরা কোয়ারি থেকে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করে থাকি। এবার ভালো ব্যবসার আশা নিয়ে কোয়ারিতে নামলেও পাথর পারাপারের কোন ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে। প্রতি বছরের ন্যায় এ মৌসুমেও কোয়ারি সংশ্লিষ্ট প্রায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় নেমেছেন। তারাও চরম হতাশায় দিন পার করছেন।
জাফলং ট্রাক মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম বলেন, পাথর উত্তোলনের মৌসুমে আমাদের ট্রাক দিয়ে পাথর পরিবহনের মাধ্যমে ভাল অর্থ উপার্জন করে থাকি। সে লক্ষ্যেই এবারের মৌসুমে অনেকই কিস্তিতে নতুন ট্রাক কিনেছেন। কিন্তু নদীর ওপার থেকে পরিবহনের মাধ্যমে সেই পাথর পারাপার করতে না পারার কারণে ক্ষতির সম্মুখিন ট্রাক মালিকেরা।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল জানান লামাপুঞ্জি থেকে পাথর উত্তোলনের জন্য যে বেইলি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছিল তা আদালতের নির্দেশে অপসারণ করা হয়েছে। তবে আদালতের আদেশ মেনে পাথর পারাপারের জন্য ব্যবসায়ীরা যদি বিকল্প কোন উদ্যোগ নেন তাহলে আমাদের কোন আপত্তি নেই।