জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী ॥ ‘আমাকে হত্যার জন্য বুলেট-গুলি ও গ্রেনেড মারা হয়, তবুও আমি মরি না’

84

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি’র কাছে আমিই সমস্যা, কারণ দেশের জনগণ আমাকে সমর্থন করে, ভয়-ভীতি আমার নেই। আমি সাহস নিয়ে কাজ জনগণের জন্য কাজ করি।
বুধাবর (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলেন।
শখ হাসিনা বলেন, অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আমি সাহস নিয়ে দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এজন্যই আমাকে হত্যার জন্য বুলেট-গুলি, গ্রেনেড হামলা, বড় বড় বোমা পুঁতে রাখা হয়। তবুও আমি মরি না। আল্লাহ আমাকে কীভাবে যেন বাঁচিয়ে রাখেন।
কারো নাম উল্লেখ না করে কতিপয় সুশিল ব্যক্তির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা চোখ থাকতে অন্ধ, কান থাকতে বধির। তাদের মাথার মধ্যে একটা জিনিসই থাকে, কখনো অস্বাভাবিক সরকার যদি আসে, অসাংবিধানিক সরকার যদি আসে বা কোন মার্শাল ‘ল’ ইমারজেন্সি যখন হয় তারা মনে করে তাদের জন্য গুরুত্ব বাড়ে। কারণ তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার ইচ্ছা আছে, পতাকা পাবার ইচ্ছা আছে, সব ইচ্ছা তাদের আছে। কিন্তু সেই ইচ্ছা পূরণ হয় না, কারণ পূরণ করতে হলে তো জনগণের কাছে যেতে হবে, ভোট চাইতে হবে। ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে, নির্বাচন করে আসার মতো সেই যোগ্যতা তাদের নেই। তাই বাঁকা পথে ক্ষমতায় যাওয়ার পথটা কোথায় সেই ওলিগলি অনবরত খুঁজতে থাকেন। আরএই ওলিগলি খুঁজতে যেয়েই.. আপনি হাজারো উন্নয়ন করেন তারা উন্নয়ন চোখেই নাকি দেখেন না। কোনো মতেই চোখে দেখে না।
তিনি বলেন, তারাও গবেষণা করেন। এ গবেষণনার টাকাটা কোথায় থেকে আসে আমি জানি না এবং তাদের গবেষণায় কখনো উন্নয়নই চোখে পড়ে না। যেখানে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল, তখনও তারা বলেন এটা হয় নাই, ওটা হয় নাই, হলেও এটা করা যাবে না, আর একটু হলে ভালো হতো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৭-০৮ যখন ইমারজেন্সি আসলো তখন তারা বেশ খোশ মেজাজে ছিলেন, উৎফুল্লে ছিলেন। দল গঠন করবেন, ক্ষমতায় যাবেন, ক্ষমতার মসনদে বসবেন। তারা সেই আসা করেছিল হয়নি। নির্বাচিন হলো, আমরা ক্ষমতায় এলাম। এরপর ২০১৪ সালে চেস্টা করা হলো নির্বাচন বানচাল করে দিয়ে কোনো বাঁকা পথে ক্ষমতায় বসা যায় কি না। জনগণের চাপে সেটা যখন হলো না অনেকেই বিছনায় শুয়ে পড়লেন, আহারে আর পতাকাটা পেলাম না, আর বুঝি হবে না। নির্বাচন এলেই এ শ্রেণিটা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আগেই বললাম চক্ষু থাকতে অন্ধ, কান থাকতে বধির। তারা কোনো ভাল কাজই দেখেন না। ভালো কাজ দেখার মতো দৃষ্টিভঙ্গিই তাদের নাই। এই শ্রেণিটাই সব থেকে যন্ত্রণাদায়ক, দেশের জন্য, মানুষের জন্য।
ফখরুল ইসলাম সম্পূরক প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন- সারাবিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও রাষ্ট্র নেতাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ’বিশ্ব মানবতার চ্যাম্পিয়ন, প্রাচ্যের নতুন তারকা, বিশ্ব মানবতার বিবেক, বিশ্ব মানবতার মা, বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিক’ ইত্যাদি নানা বিশেষণে তাকে ভূষিত করে সম্মানিত করেছেন। এতে বাঙালি হিসেবে আমরাও গর্বিত। সারাবিশ্ব যখন প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ তখন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কী প্রয়োজন আছে?
জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতো আলো জ্বালিয়ে হঠাৎ করেই কেন প্রশ্নকর্তা সুইচ অফ করে দিলেন? বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রয়োজন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। ওই এলাকার মানুষকে জিজ্ঞেস করুন তারা বিদ্যুৎ চায় কি না। বিভিন্ন
বিশেষণ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, কী পেলাম বা কী পেলাম না তার হিসাব আমি করি না। কাজ করি দেশের মানুষের জন্য,এ দেশের প্রয়োজনে। তাই কে কত বিশেষণ দিলো সেটা নিয়েও আমার কোনো চিন্তা নাই। আমি তো মনে করি একমুখে যখন বিশেষণও দিবে, আবার যদি একটু উনিশ থেকে বিশ হয় ওই মুখে গালিও দিবে। যে হাতে মালা দিবে সেই হাতে ঢিলও মারবে। কাজেই হাজার বিশেষণ দিলেও আমার মাথা কখনও খারাপ হবে না। আমি বেতালা হব না।