স্পোর্টস ডেস্ক :
দাপুটে জয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে শুভ সূচনা করল বাংলাদেশ। সোমবার টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে হিথ স্ট্রিকের জিম্বাবুয়েকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। তামিম-সাকিবদের দারুণ ব্যাটিংয়ে ১৭১ রানের টার্গেটে ২৮.৩ ওভারেই পৌঁছে যায় টিম টাইগার। তবে ম্যাচটি একটা আক্ষেপ হয়ে রইল তামিমের জন্য (৮৪*)। প্রতিপক্ষের স্কোর ছোট হওয়ায় সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েও অপরজিত থেকে মাঠ ছাড়তে হল দেশসেরা ওপেনারকে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ১৭১ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড়ো সূচনা করেন এনামুল হক বিজয়। সঙ্গী তামিম ছিলেন ধীরস্থির। তবে প্রত্যাবর্তন ম্যাচে ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ বিজয় ১৯ রানে সিকান্দার রাজার বলে ক্যাচ দেন। তামিমের সঙ্গী হন তার প্রিয়বন্ধু সাকিব আল হাসান। ধীর শুরুর পর মুজরাবানির এক ওভারে তিন বাউন্ডারি মেরে হাত খোলেন সাকিব।
বড় ইনিংসের আশা জাগিয়েও ৪৬ বলে ৩৭ রান করে সিকান্দার রাজার দ্বিতীয় শিকার হন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। ভাঙে ৭৮ রানের দারুণ জুটি। সাকিবের বিদায়ের পর ক্যারিয়ারের ৩৯তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম ইকবাল। ৬৭ বলে এই মাইলফলকে পৌঁছতে ৫টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। হাফ সেঞ্চুরির পর মুশফিককে সঙ্গী করে আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন তামিম। মুশফিকের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৬৩ রানের জুটিতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন দেশসেরা ওপেনার।
ম্যাচ শেষে তামিম ৯২ বলে ৮ চার ১ ছক্কায় ৮৪ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গী মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ১৪ রানে মাঠ ছাড়েন। জিম্বাবুয়ের হয়ে দুটি উইকেটই নিয়েছেন সিকান্দার রাজা। আগামী ১৯ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টাইগারদের দ্বিতীয় ম্যাচ। এর আগে ১৭ জানুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে শ্রীলঙ্কা।
এর আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে সাকিবের ঘূর্ণির শিকার হয় জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সলোমন মির (০) এবং এরভিনকে (০) ফিরিয়ে জোড়া আঘাত হানেন তিনি। অভিজ্ঞ মাসাকাদজাকে ১৫ রানে মুশফিকের তালুবন্দি করেন অধিনায়ক মাশরাফি। সিকান্দার রাজাকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন ব্রেন্ডন টেইলর। কিন্তু ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমানের বলে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হয় ২৪ রানেই থামে তার ইনিংস।
এরপর ম্যালকম ওয়েলারকে (১৩) সাব্বির রহমানের তালুবন্দি করে ক্যারিয়ারের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন সানজামুল। ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে একাই লড়াই করছিলেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত সিকান্দার রাজা। নাসিরকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯২ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় তুলে নেন ক্যারিয়ারের নবম হাফ সেঞ্চুরি। সেই নাসিরের ফিরতি ওভারেই ৫২ রানে রান-আউট হয়ে যান তিনি।
জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমারকে (১২) রুবেলের তালুবন্দি করে তৃতীয় শিকার ধরেন সাকিব। ৪৮তম সেই রুবেলের জোড়া আঘাতে ফিরেন পিটার মুর (৩৩) আর চাতারা (০)। হ্যাটট্রিকের সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি এই গতি তারকা। ব্লেসিং মুজরাবানিকে (১) বোল্ড করে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৪৯তম ওভারে ১৭০ রানে অল-আউট হয় জিম্বাবুয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: আট উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ে ইনিংস: ১৭০ (৪৯ ওভার)
(হ্যামিলটন মাসাকাদজা ১৫, সলোমন মায়ার ০, ক্রেইগ আরভিন ০, ব্রেন্ডন টেইলর ২৪, সিকান্দার রাজা ৫২, ম্যালকম ওয়ালার ১৩, পিটার মুর ৩৩, গ্রায়েম ক্রেমার ১২, কাইল জারভিস ৪*, টেন্ডাই সাতারা ০, ব্লিজিং মুজারাবানি ১; সাকিব আল হাসান ৩/৪৩, সানজামুল ইসলাম ২৯/১, মাশরাফি বিন মুর্তজা ১/২৫, মোস্তাফিজুর রহমান ২/২৯, রুবেল হোসেন ২/২৪, নাসির হোসেন ০/১৫)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৭১/২ (২৮.৩ ওভার)
(তামিম ইকবাল ৮৪*, এনামুল হক বিজয় ১৯, সাকিব আল হাসান ৩৭, মুশফিকুর রহিম ১৪*; কাইল জারভিস ০/১৫, টেন্ডাই সাতারা ০/২৬, সিকান্দার রাজা ২/৫৩, ব্লিজিং মুজারাবানি ০/৩১, গ্রায়েম ক্রেমার ০/৪৬)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: সাকিব আল হাসান।