আতিকুর রহমান মাহমুদ ছাতক থেকে :
ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়কে ৮টি ব্রীজের মধ্যে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ রয়েছে ৬টি। এ গুলো দিয়ে প্রত্যহ হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে। দূরপাল্লার যাত্রী ও মালবাহি যানবাহন চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। অনেকগুলো ব্রীজের ভেতরের অংশের ডালাই উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিজের পাকা পিলার-রেলিংও ভেঙ্গে গিয়ে চলাচলে আরো ঝুঁকি বেড়েছে। বৃষ্টি দিলেই এসব গর্তে পানি জমে প্রাই সময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী সাধারণ।
জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক ১৩কিলোমিটার সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছাতক, দোয়ারাবাজার, কোম্পানীগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার লাখো মানুষ চলাচল করে থাকেন। দোয়ারাবাজারসহ ছাতকবাসী সারা দেশের সাথে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক যোগাযোগ মাধ্যম এটি। এ ছাড়া শিল্পনগরী খ্যাত ছাতকে রয়েছে লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালামাল বহন করছে সহ¯্রাধিক ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। দূরপাল্লার যাত্রীবাহি বাস ও মিনিবাসসহ অন্যান্য যানবাহনে নিত্যদিন এ সড়ক পথেই চলাচল করতে হচ্ছে। এ সড়কে ব্রীজ রয়েছে ৮টি। গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট অতিক্রম করে ছাতক সড়কে প্রবেশ করার পর বটেরখালের অন্যতম শাখা তেতইখালী খালের উপর একটি ব্রিজ। এ ব্রীজটি দীর্ঘদিন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ব্রীজের ভেতরের অংশে পিস উঠে গিয়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ব্রীজের দু’পার্শ্বের রেলিং ভেঙ্গে গেছে কয়েকবার। কর্তৃপক্ষ এটিকে জোড়া-তালি দিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় এক কিলোমিটার পরে আরেকটি ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ পাওয়া যায়। সেটি গড়গাঁও গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। এখান থেকে প্রায় আরো দু’কিলোমিটার পথ চলারপর ঝাওয়ার খাড়া নামক ব্রীজ। এটি চলাচলের উপযুগি হলেও প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে হাসনাবাদ মাদরাসা সংলগ্ন ব্রিজটি চলাচলের প্রায় অনুপযুগি। তিন কিলোমিটার পর মাধবপুর ও হাফ কিলোমিটার পরে শিখা সতের’র কাছে অবস্থিত লাল ব্রিজ। লাল ব্রিজটি চলাচলের উপযুগি হলেও মাধবপুর গ্রাম সংলগ্ন ব্রিজটি অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এ ব্রিজটি যে কোন মুহূর্তে ভেঙ্গে যেতে পারে। ব্রিজটি ভেঙ্গে গেলে এখানে হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে। এখান থেকে কিছু দূর অতিক্রম করার পর ছাতক পৌরসভার সীমান্তে প্রস্তাবিক ছাতক উপশহরের কাছে একটি ও রহমতভাগ এলাকায় অপর ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ। এ দু’টি ব্রিজের অবস্থা অন্যান্য ব্রিজের তুলনায় আরো মারাত্মক। লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট বহনকারি মোনায়েম খান বাবুলের ট্রাক চালক খালেদ আহমদ ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়কের ব্রিজগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়কের সবগুলো ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। তবে এর মধ্যে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি হলো মাধবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রীজ। সিমেন্ট বোঝাই বা যাত্রীবাহি যানবাহন এ ব্রিজ পারাপার হচ্ছে খুব ঝুঁকি নিয়ে। ব্রীজের এক পার্শ্বে গাড়ি উঠলে ব্রিজের অপর পার্শ্ব সংযোগ থেকে আলাদা হয়ে উপর দিকে উঠে যায়। দ্রুত কার্যকরি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ব্রিজটি ভেঙ্গে মালবাহী বা যাত্রবাহী যানবাহন গভীর খালে পড়ে গিয়ে হতাহতের আশঙ্কা করেন শ্রমিক নেতা খালেদ। এ ব্যাপারে ছাতক উপজেলা (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী রমজান আলী জানান, গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক ও দোয়ারাবাজার সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ ৯টি ব্রীজের ডিজাইন পাওয়া গেছে। ৯টির মধ্যে ৬টি ব্রীজ হবে আরসিসি। টেঙ্গারগাঁও থেকে দোয়ারাবাজার পর্যন্ত অপর তিনটি বেইলি ব্রীজেরও কাজ চলছে। ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপ্রোজেল চলমান আছে। এগুলো পাঠানোর পর ব্রীজগুলোর অনুমোদন হয়ে আসবে। তবে কতদিনের মধ্যে ব্রীজের কাজ শুরু হতে পারে এ ব্যাপারে তিনি আপাদত কিছুই বলতে পারছেন না। জনগুরুত্বপূর্ণ ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়কের মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ৬টি পুরাতন ব্রীজ ভেঙ্গে নতুন করে স্থাপনের প্রয়োজন বলে মনে করছেন এ অঞ্চলের সচেতন মানুষ।