কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
গত মঙ্গলবার কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল ইউপির বড়চতুল গ্রামে মুখে কীটনাশক জাতীয় বিষ ঢেলে দিয়ে দেড় মাসের নিষ্পাপ শিশু নাদিম আহমদ হত্যার একমাত্র সন্দেহভাজন খুনী তারই চাচী সুমানা বেগম শ^শুর বাড়ীতে নজরবন্দী থাকার পর গত বুধবার রাতে দুই শিশু সন্তানকে রেখে সিএনজি গাড়ী যোগে পালিয়ে গেছে। পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ শিশুটির খুনি সুমানা বেগমকে আটক করার জন্য পিছু ধাওয়া করলেও তাকে ধরতে পারেনি। এ নিয়ে এলাকায় জনমনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। নজরবন্দী থাকার পরও কিভাবে সুমানা বেগম শ^শুর বাড়ী থেকে রাতের আঁধারে কার সহযোগিতায় পালিয়ে গেলো! অদ্যবধি পর্যন্ত সে কেন গ্রেফতার হয়নি এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে নিজ বাড়ীতে বড়চতুল গ্রামের সৌদি প্রবাসী নজরুল ইসলামের দেড় মাসের শিশু সন্তান নাদিম আহমদকে মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়। ঐ দিন রাতে শিশুটিকে সিওমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটির লাশ ময়না তদন্তের পর বুধবার রাতে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় শিশুটির মা সুমি বেগম তার সন্তানকে কীটনাশক জাতীয় বিষ ঢেলে দিয়ে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগ এনে কানাইঘাট থানায় গত বুধরাত রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটির চাচী সুমানা বেগমকে একমাত্র আসামী করে অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগ দাখিলের সময় শিশুটির স্বজনরা জানতে পারেন, সন্দেহভাজন খুনী সুমানা বেগম শ^শুর বাড়ীতে নজরবন্দী থাকা অবস্থায় বড়চতুল গ্রামের অটোরিক্সা সিএনজি চালক এখলাছুর রহমানের সিএনজি গাড়ী যোগে পালিয়ে কানাইঘাট সদরের দিকে আসছে। এমন সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক বিষয়টি থানা পুলিশকে নাদিমের নিকটাত্মীয়রা জানালে থানার এসআই হুমায়ুন কবির একদল পুলিশ নিয়ে উপজেলা পরিষদের গেইটের সামনে অবস্থান করেন। দ্রুত বেগে এখলাছুর রহমানের সিএনজি গাড়ীটি নিয়ে পুলিশের সামনে আসার পর গাড়ীটি থামানোর চেষ্টা পুলিশ করলেও সে গাড়ী না থামিয়ে সুমানা বেগমকে নিয়ে দ্রুত বেগে মহেষপুর পাকা রাস্তা দিয়ে ঢুকে পড়লে পুলিশও তাদের পিছু নেয়। এক পর্যায়ে কানাইঘাট কলেজের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় সুমানা বেগমকে বহনকারী সিএনজি সিলেট-থ-১৩-০৯২০ নং গাড়ীটি পুলিশ উদ্ধার করতে পারলেও ধরতে পারেনি শিশুটির ঘাতক সুমানা বেগমকে। সে নিরাপদে সিএনজি ড্রাইভার এখলাছুর রহমানকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়। অদ্যবধি পর্যন্ত পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এস.আই হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, শ^শুর বাড়ী থেকে রাতের আঁধারে সিএনজি গাড়ী যোগে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার পথে শিশুটির সন্দেহভাজন খুনী সুমানা বেগমকে আমরা গ্রেফতারের চেষ্টা করি, কিন্তু সে পালিয়ে যায়, একটি সিএনজি গাড়ী উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি যেখানে শিশুটিকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে সেই বাড়ী পরিদর্শন করেছেন বলে এস.আই হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন। এদিকে বিষ প্রয়োগে নিহত শিশু নাদিমের আত্মীয় স্বজনরা জানান, পুলিশকে সুমানা বেগমের পালানোর সংবাদ দেওয়ার পরও তাকে গ্রেফতার করতে না পারায় তাদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। প্রসজ্ঞত শিশুটির হত্যাকারী সন্দেহভাজন সুমানা বেগমের পিত্রালয় হচ্ছে কানাইঘাট সদর ইউপির সোনাপুর গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুল ওয়াহিদ বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) নুনু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিশু নাদিমের হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত পূর্বক অভিযোগটি রেকর্ড করে আসামীকে গ্রেফতার করা হবে।