ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকে উপজেলা হাসপাতালেই বিনা চিকিৎসায় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গুঞ্জন চলছে ।
জানা যায়, ছাতক শহরের কুমনা এলাকার মৃত হোসেন আলীর পুত্র মোশাহিদ আলীর রিকশা গেরেজের রিকশা চালক মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কান্দিরগাঁও গ্রামের সুরুজ মিয়ার পুত্র সুন্দর আলী (৪০)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পেটের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাতিকোনা গ্রামের মৃত আবদুল মনাফের পুত্র আবদুস শুকুর ও চানাচুর বিক্রেতা টুনু মিয়া রোগীকে কাঁধে করে ছাতক হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আজাদুর রহমান ও ফারুকুল ইসলাম উপযুক্ত অভিভাবকের অজুহাত দেখিয়ে রোগীকে ভর্তি করেননি। উল্টো কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীর সাথে আসা লোকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এ সময় রোগী নিজের চিকিৎসার জন্যে চিকিৎসকদের হাতে-পায়ে ধরে মিনতি করেন এবং বন্ডসই দিতেও রাজি হন চিকিৎসার জন্যে। কিন্তু এতেও পাষাণ হৃদয় গলেনি চিকিৎসকের। অবশেষে ব্যথার যন্ত্রণায় কাতর হয়ে রোগী নিজেই হাসপাতালের বেডে শুয়ে পড়েন। ওয়ার্ড বয় আবু সাইদ তাকে একটি কম্বল এনে দেয়। ওই রাতে ও পরের দিন বুধবার সকালে রুটিন মতো ওয়ার্ডে ডাক্তার রাউন্ডে এসে সুন্দর আলীকে চিকিৎসক ও নার্স কেউ তাকে কোন ওষুধও ব্যবস্থাপত্র দেয়নি। অবশেষে নিরুপায় হয়ে পাশের বেডের রোগী কোম্পানীগঞ্জের ইছাকলস গ্রামের মৃত রহমত আলীর পুত্র আমির আলী (৫৫) ও ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউপির দিঘলী-ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের ইসমাইল আলীর স্ত্রী আলেয়া বেগম (২৬) এর কাছ থেকে একটি ব্যথার ট্যাবলেট চেয়ে সেবন করেন সুন্দর আলী। বুধবার বেলা ২টায় হাসপাতাল বেডেই তিনি মারা গেলে ওয়ার্ড ক্লিনার অঞ্জনা রানী ও শুক্লা রানী লাশটি হাসপাতাল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার অভিজিৎ শর্ম্মা বলেন, তিনি ট্রেনিংয়ে ছিলেন। শুনেছেন রোগী পেটে ব্যথায় মারা গেছে। এর বেশী তার কিছু জানা নেই বলে জানান। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সুনামগঞ্জ সহকারি পুলিশ সুপার (ছাতক-দোয়ারা) মো. দোলন মিয়া জানান, ঘটনার ব্যাপারে ম্যাসেজ পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জে ময়না তদন্ত শেষে লাশ নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।