দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
দক্ষিণ সুনামগঞ্জে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা ঐ বাড়ি থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা, ৪ ভরি স্বর্ণ ও ১৩টি স্মার্ট ফোন সেট সহ ৫ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের নোয়াখালী গ্রামের ইউনুছ আলীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় মুখোশধারী ১৫-২০ জনের সঙ্গবদ্ধ ডাকাত দল ঐ বাড়িতে ঘরের দক্ষিণের কেছি গেইটের তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে গ্রামের ইউনুছ আলী ও তার পরিবারের সকল সদস্যকে এক রুমে বেঁধে মারপিট করে ঘরের স্টিলের আলমিরা থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা ৪ ভরি স্বর্ণ ও ১৩টি স্মার্ট ফোন লুটপাট করে নিয়ে যায়।
পরে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে থানার অফিসার ইনচার্জ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ভোর ৫টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেন। এ সময় পুলিশ ঐ বাড়ির পাশে আমন খেতে ২টি স্মার্ট ফোন পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তা উদ্ধার করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নোয়াখালী বাজারের পশ্চিম পাশে ও নোয়াখালী ভীমখালী রাস্তার দক্ষিণ পাশে আমল ক্ষেতে একটি মাত্র বাড়িতে মৃত হাতিম উল্লাহর ছেলে ইউনুছ আলীর ৪ ছেলের মধ্যে ২ জন সৌদি প্রবাসে থাকেন দীর্ঘদিন যাবৎ। ২ জন দেশে থেকে বিভিন্ন ব্যবসা করেন। ঐ ৪ছেলের মধ্যে ৩ ছেলে বিবাহিত। কিন্তু ঐদিন পরিবারের প্রবাসী তাজ উদ্দিন, কবির উদ্দিন ও দেশে থাকা ফখর উদ্দিনের স্ত্রীগণ নিজেদের পিত্রালয়ে বেড়াতে যান। ঐ রাতে বাড়িতে ইউনুছ আলী, ইউনুছ আলীর স্ত্রী সহ তার ছেলে ফখর উদ্দিন, জিয়া উদ্দিন বাড়িতে ছিলেন। ঐ বাড়িতে প্রবেশ করে দেখা যায়, ঘরের মালামাল এলোমেলো ও বাড়ির সব আসবাবপত্র স্টিলের আলমিরার দরজা ভাঙা, ও ডাকাতদের ফেলে যাওয়া রশি দেখতে পাওয়া যায়। যে রশি দিয়ে পরিবারের লোকদের বাঁধা হয়েছিল।
এ সময় ইউনুছ আলীর ছেলে ফখর উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন, রাত ২টায় মুখোশধারী ১৫-২০ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাত দল আমার ঘরের কেছি গেইটের তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে আমি সহ আমার ভাই জিয়া উদ্দিন ও আমার বাবা-মাকে বেঁধে ঘরের একটি কক্ষে রেখে হুমকি-ধমকি দিতে থাকা, এ সময় তারা আমাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিলে আমরা ভীত হয়ে ডাকাতদের আলমিরার চাবি দেই। তারা তখন আলমিরা খুলে ২ লক্ষ টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণ হাতিয়ে নেয়। পরে তারা আমার ঘরে রক্ষিত ১৩টি স্মার্ট ফোন লুট করে। আমাকেও মারপিট করে। প্রায় ৪৫ মিনিট তারা আমার ঘরের মালামাল লুট করে। পরে ডাকাতরা যাওয়ার সময় আমাদেরকে হুমকি দিয়ে বলে কাউকে বললে আবার আমার বাড়িতে হানা দিয়ে আমি সহ আমার পরিবারের লোকদের হত্যা করবে।
স্থানীয় নোয়াখালী বাজারের ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল বাছিত সুজন বলেন, ঘটনাটি শুনে আমি সহ এলাকার লোকজন সকালে গিয়ে দেখে এসেছি। পরিবারের লোকজনের মুখ থেকে আমরা শুনেছি রাতে ডাকাতি হয়েছে। আমরা গিয়ে দেখেছি ঘরের মালামাল এলোমেলো।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি শুনে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখান থেকে ২টি স্মার্ট ফোন আমন ক্ষেত থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছি। তিনি এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটা ডাকাতিও বলা যাবে না, চুরি বলা যাবে না। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি।