হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
দেখতে আর-১ বা অ্যাপসি মোটরসাইকেলের মতো তেল ছাড়াই শুধুমাত্র ব্যাটারীর মাধ্যমেই চলবে কাঠের তৈরি মোটরসাইকেল। ৪টি ব্যাটারীর মাধ্যমে মোটরসাইকেলটি ঘন্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ৩০ কিলোমিটার পথ চলতে পারবে। সম্প্রতি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের হুমায়ুন কবীর নামে এক যুবক বাইকটি জনসম্মুখে আনেন। এটি তৈরি করতে টাকার জোগান এবং দরিদ্র অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন লোকজনের বাড়িতে কাঠমিস্ত্রি ও রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেন তিনি। হুমায়ুন ওই গ্রামের নাসির উদ্দিন এবং আফিয়া খাতুনের একমাত্র সন্তান। তার জন্মের তিন মাস পর তার বাবা নাসির উদ্দিন পরিবার ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। মা আফিয়া খাতুন একমাত্র সন্তানকে কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছেন। হুমায়ুন ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় সিলেট বোর্ডের অধীনে হবিগঞ্জ কবির কলেজিয়াট কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন তিনি। চৌমুহনী ইউনিয়নের ডা. জরিফ হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে কারিগরি প্রতিভার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের (অরুন) নজরে পড়ে সে। তার উৎসাহ ও সহযোগিতায় হুমায়ূন কবির ছোট খাটো যান্ত্রিক খেলনা তৈরিতে সক্ষম হয়। পরে হবিগঞ্জ কবির কলেজিয়েট একাডেমিতে অধ্যয়নকালে ২০১৫ সাল থেকে কাঠ দিয়ে ব্যাটারী চালিত মোটরসাইকেল তৈরির কাজ শুরু করে। টানা ২ বছর সাধনার পর হুমায়ূন কবির কাঠের তৈরি ব্যাটারি চালিত এ মোটরসাইকেলটি তৈরিতে সক্ষম হয়। ডা. জরিফ হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন অরুন জানান ,হুমায়ুন কাঠ দিয়ে ব্যাটারি চালিত মোটরসাইকেল আবিষ্কার করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। মোটরসাইকেলটির ডিজাইন হুমায়ূন নিজেই করেছে। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান জানান, এ রকম একটি বিষয় আমি শুনেছি। হুমায়ুন যদি যোগাযোগ করলে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।