কাজিরবাজার ডেস্ক :
আসছে নতুন বছর। উদয় হবে নতুন বছরের সূর্য। সেই সাথে নতুন বছরে নতুন বইয়ের ঘ্রানেও মাতবে সিলেটের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সারা দেশে পাঠ্যবই উৎসব পালন করা হয় পহেলা জানুয়ারী থেকে। আর ওই দিন নতুন বইয়ের সাথে উৎসবে মেতে উঠে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই বছরও তার জন্যই অপেক্ষা করছেন বিদ্যালয়ের শিশু কিশোররা। কবে পাবে নতুন বই সেই আশায়। শতভাগ না হলেও প্রায় ৯৫ শতাংশ বই বিভিন্ন স্কুলে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসার গোলজার আহমদ খান।
তিনি বলেন, আমাদের বই গুলো যেহেতু উপজেলা ভিত্তিক তাই বেশীর ভাগই স্কুলেই বই পৌঁছে গেছে। কিছু বাকী রয়েছে। যেগুলো হয়তো দ্রুতই চলে যাবে। আমাদের একটু সমস্যা হয়ে যায় ধর্ম শিক্ষা, উচ্চতর গণিত এসব বইগুলোতে। কোথায় এগুলোর চাহিদা বেশী। কোথাও চাহিদা একটু কম থাকে। তাই হিসেব মিলিয়ে আমাদের পাঠাতে হয়। অন্যান্য বই আগেই পৌঁছে গেলেও এই বইগুলো একটু সময় লাগে। তবে এবার আমাদের বই গুলোতে কোন সমস্যা। যেগুলো বাকি রয়েছে সেই বইগুলোও পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই সেগুলো পৌঁছে যাবে।
সিলেট জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, সিলেটে সর্বমোট মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩০২টি। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬টি এবং বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৯৬টি। এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে ৫৩, দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল ১৪৪টি। এসএসসি ভোকেশনাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৫ এবং ইংলিশ ভার্সন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২৪টি। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৫৬ লাখ ৮৭ হাজার ৩৯৮টি। এর মধ্যে মাধ্যমিকে ৪২ লাখ ১৯২২৬টি, দাখিলে ৮ লাখ ৪৩০৬, এবতেদায়ীতে ৫ লাখ ৬৩ হাজার ১২৬, এসএসসি (কারিগরি) ৩৮ হাজার ১১৫ এবং ইংরেজি ভার্সনে ৬২ হাজার ৬২৫টি।
এখনো সিলেটের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শতভাগ বই পৌঁছেনি। বিশেষ করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৬৫ শতাংশ বই পৌঁছেছে বলে জানা যায়। তবে সময়ের আগেই সেই সব বিদ্যালয়গুলোতে বই পৌঁছে যাবে বলে জানান জেলা শিক্ষা অফিসার গোলজার আহমদ খান।
গোয়াইনঘাট উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার রেজাউল ইসলাম বলেন, আমাদের উপজেলায় প্রাক প্রাথমিকের একটি বিষয়ের ছাড়া সব বই পৌঁছে গেছে। ১ জানুয়ারির আগেই আমরা বইটি পেয়ে যাব আশা করছি।
দক্ষিণ সুরমার নছিবা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ এইচ এম ইসরাইল আহমদ বলেন, চাহিদা অনুযায়ী মাধ্যমিকে ৮০ ভাগ বই পৌঁছেছে। প্রাথমিকে এখনো কোনো বই আসেনি।
দি এইডেড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সিলেট জেলা শিক্ষক সমিতির সচিব শমসের আলী বলেন, আমাদের স্কুলে শতভাগ বই পৌঁছে গেছে। অন্যান্য বিদ্যালয়ের হিসেবটা জানা নেই।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর, সিলেট বিভাগীয় উপপরিচালক তাহমিনা খাতুন বলেন, বেশিরভাগ উপজেলায় বই পৌঁছে গেছে। কিছু বাকী রয়েছে, যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছে দেয়া হবে।
২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর ১ জানুয়ারি বই উৎসব হিসেবে পালন করা হচ্ছে। বিনামূল্য বই বিতরণের এ ধারাবাহিকতা বর্তমানে এক মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। প্রথমদিকে বছরের শুরুতে শুধু প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক ক্লাসের ছাত্রদের নতুন একসেট বই দেয়া হতো। এখন তা নবম শ্রেণি পর্যন্ত করা হয়েছে।