কাজিরবাজার ডেস্ক :
জেলার ১৩ উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনার লক্ষ্যে বিয়ানীবাজার উপজেলায় শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে পাওয়ার গ্রিড স্টেশন। এ গ্রিড স্টেশন থেকে সিলেটের ১৩ উপজেলায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হবে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) গ্রিড স্টেশনটি নির্মাণ করছে। এ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষেরদিকে। চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যেই এটি চালু করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের মার্চে বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাইয়ে এই নতুন পাওয়ার গ্রিড স্টেশন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৮০ এমবিএ ক্ষমতাসম্পন্ন এই গ্রিড স্টেশন নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় শতকোটি টাকা। এই স্টেশনের বিদ্যুত সিলেটের ১৩ উপজেলায় সরবরাহ করা হবে। বর্তমানে সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জেলার ১৩ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বিদ্যুত উন্নয়ন বোডের্র আওতায় রয়েছে সিলেট শহর ও আশপাশের কিছু এলাকা।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্র জানায়, সরকার সিলেটসহ সারাদেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে সিলেটের ১৩ উপজেলাকেও শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে সিলেট সদর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেটের বাকি ১১ উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনতে, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ক্রমবর্ধমান গ্রাহকসংখ্যার চাপ সামাল দিতেই বিয়ানীবাজারে এই গ্রিড স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে সংযোগ সড়ক ও টাওয়ার নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজ মিলিয়ে প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে সিলেটের কুমারগাঁও গ্রিড এবং ফেঞ্চুগঞ্জ গ্রিডের মাধ্যমে সিলেটের সকল উপজেলায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। কুমারগাঁও গ্রিড থেকে আট উপজেলায় এবং ফেঞ্চুগঞ্জ গ্রিড থেকে পাঁচ উপজেলায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। তবে কুমারগাঁও গ্রিডে ওভারলোডের সমস্যা রয়েছে। প্রায় সময়ই এটি ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের লোড নিতে পারে না। এছাড়া কুমারগাঁও গ্রিড থেকে দূরবর্তী বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুত সরবরাহ ব্যয়সাপেক্ষ ও এতে সিস্টেম লসও হয়। বিয়ানীবাজারে গ্রিড স্টেশন নির্মাণের পেছনে এসব বিষয়ও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। কুমারগাঁও গ্রিড ওভারলোডেড হয়ে যাওয়ায় অনেক সময় বিদ্যুত সঞ্চালনে সমস্যা দেখা দেয়। চারখাই গ্রিড স্টেশন নির্মাণ করা হলে এ সমস্যা থাকবে না। সুরমা নদীর ওপর নির্মিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ওভারলোডেড হয়ে যাওয়ায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৩ কেভির একটি থার্ড সার্কিট নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে সমিতির আওতাভুক্ত সিলেট জেলার সকল উপজেলা বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসা হবে। পুরো এলাকা বিদ্যুতায়নের আওতায় এলে প্রায় ৮০ হাজার গ্রাহক যোগ হবে।