তাহিরপুর থেকে সংবাদদাতা :
তাহিরপুরে বন্যা কমেছে বেড়েছে দুর্ভোগ, জেলা সদরের সাথে একমাত্র সড়ক সহ আভ্যন্তরীণ সড়কগুলো বন্যার পানিতে ভেঙ্গে যাওায় সর্ব সাধারণ পড়ছে নানা মুখী সমস্যায়। বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় ঘর বাড়ির অনেক প্রয়োজনীয় আসবাস নষ্ট হয়ে গেছে, সেই সাথে পানিতে গোখাদ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গরু, মহিষ নিয়ে লোকজন পড়েছে চরম বিপাকে।
বন্যা পরবর্তী সময়ে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদর থেকে বাদাঘাট ইউনিয়নের রাস্তাটি বন্যার পানির তোরে ঠাকাঠুকিয়া, হো¯œার ঘাট, সূর্য্যেরগাঁও নামক স্থানে ভেঙ্গে গেছে। জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের সড়কটি আনোয়ারপুর বাাজারের দক্ষিণ পাশে ও আনোয়ারপুর ব্রীজের পূর্ব পাশে অনেকটা জায়গা জুড়ে পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে। সড়কগুলো ভেঙ্গে যাওয়ায় উপজেলা সদর ও জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সর্ব সাধারণ। জেলা সদর থেকে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে গত ১০ দিন ধরে। সুনামগঞ্জ থেকে আনোয়ারপুর বাজার পর্যন্ত সরাসরি গাড়ি নিয়ে আসা যায়, তার পর কাদামাটি পেরিয়ে আবার অন্য কোন যানবাহন ধরে তাহিরপুর আসতে হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন সময় ব্যায় হচ্ছে অপরদিকে পরিবহন ভাড়াও গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ। তাছাড়া আনোয়ার বাজারের পূর্ব পাশে ওয়েজ খালি সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় জামালগঞ্জ উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সেই সাথে তাহিরপুর উপজেলার বালিুজুরী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর, তিওরজালাল, লোয়াচুরা গ্রামের লোকজন তাহিরপুর সদর কিংবা জেলা সদরে যোগাযোগ করতে গিয়ে পড়ছে নানামুখী সমস্যায়। তাছাড়া সড়কটি ভাঙ্গার কারণে আনোয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্র উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। বন্যার পানিতে তোড়ে নদী তীরবর্তী ঘাঘরা, সোহালা, মিয়ারচর, বালিজুরী আনোয়ারপুর বাজারের অর্ধশতাধিক দোকানকোটা ভেঙ্গে যাওয়ায় ব্যবসায়ীর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে উপজেলার বালিজুরী, দক্ষিণকুল, মাহতাবপুর, বড়খলা, চিকসা, সীমানা, রাচিনগর, তিওর জালাল, ঠাকাঠুকিয়া, রসুলপুর, পিরিজপুর, আনন্দ নগর, মারালা, নোয়াগাঁও সহ অর্ধশতাধিক গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করায় তাদের কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে সেই সাথে বাড়িতে সংরক্ষিত গরু-মহিষের খাদ্য খরখুটো পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান বিভিন্ন বাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবাসায়ীরা ও বিভিন্ন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন।
বাদাঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, বন্যার পূর্বে আমরা মোটর সাইকেলে করে কোন রকম উপজেলা সদরে যোগাযোগ করেছি কিন্তু বন্যার পর উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে পুরোপুরি ভাবে নৌকার উপর নির্ভরশীরল হতে হচ্ছে।
আনোয়ার পুর বজারের ঔষধ বিক্রেতা দ্বিরাজ ভট্যাচার্য্য ও হোটেল ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বলেন, বন্যার পানি কমেছে কিন্তু বন্যার পানিতে দোকান কোটা ভেঙ্গে যাওয়ায় আবার নতুন করে সবকিছু তৈরী করতে হচ্ছে।
উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের আনন্দ নগর গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, বন্যার পানিতে বাড়ি ঘর নিমজ্জিত থাকায় কাচা ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে সেই সাথে গরু মহিষের খাবারও খরখুটোও পানিতে পচে নষ্ট হয়েছে। বর্তমানে পানি একটু কমলেও গরুর খাবার নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছি।
তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে সিএনজি চালক মধ্য তাহিরপুর গ্রামের আলী হায়দার তিনি জানান, বন্যার পর রাস্তার ভেঙে যাওয়ার কারণে তিনি সুনামগঞ্জ যেতে পারছেন না। আনোয়ার বাজার পর্যন্ত আসা যাওয়া করছেন এতে করে তার দৈনন্দিন রোজগারও কমে গেছে।
আনোয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিমল চন্দ্র দে বলেন, আনোয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়টি ভেঙ্গে যাওয়া স্থানের দক্ষিণ পাশে। বর্তমানে ঐ স্থান দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নৌকায় পারাপার করতে গিয়েও ভয় যাচ্ছে। যার ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে।
সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, জেলা গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক। পর্যটক সহ অনেক লোকজন এ সড়কটি ব্যবহার করেন আমরা ঈদের আগেই সড়কটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে।