স্টাফ রিপোর্টার :
দীর্ঘদিন পর হলেও লাক্কাতুরা চা বাগানের শ্রমিকরা একটি আনন্দের উপলক্ষ খুঁজে পেয়েছেন কারণ তারা যেখানে কাজ ও বসবাস করেন সেখানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী হস্ত ও কুটির শিল্প মেলা। আর এ মেলার মাঠ বরাদ্দ বাবত চা শ্রমিকদের ফান্ডে জমা হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। এ টাকা দিয়ে চা শ্রমিকদের ধর্মীয় ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হবে। এমনটাই জানিয়েছেন- লাক্কাতুরা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির প্রধান ও চা শ্রমিক নেতা রাজু গোয়ালা। তিনি জানান, এর আগেও লাক্কাতুরা বাজার সংলগ্ন চা শ্রমিক ও তাদের সন্তানদের খেলাধূলার জন্য এ মাঠটি নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন উপলক্ষে বরাদ্দ নিলেও তাদের ফান্ডে কোন টাকা আসেনি। এবারই প্রথম মেলার মাধ্যমে বিপুল অংকের এই টাকাটি তারা পেয়েছেন। যে কারণে শুধু তিনি নন অধিকাংশ চা শ্রমিকই এ জন্য খুশি হয়েছেন। বেশ কয়েকজন চা শ্রমিকের সাথে আলাপকালে তারাও এমনটি জানিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন মেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। মেলার প্রধান সমন্বয়কারী বাংলাদেশ মসলিন ও জামদানী সোসাইটির সভাপতি এম. এ. মঈন খান বাবলু জানিয়েছেন- মেলার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে তৃণমূল ও দুস্থ নারী উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করা। পাশাপাশি যার চিকিৎসার সাহায্যার্থে এ মেলার আয়োজন সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য এনাম আহমদ চৌধুরী ও মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মারীয়াম চৌধুরী মাম্মী দম্পতির পুত্র জটিল কিডনি রোগে আক্রান্ত ডেভিট এনামের চিকিৎসায় আর্থিক অনুদান প্রদান করা। তিনি জানান, মেলা চলাকালে এখানে তৃণমূল নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে ট্রেনিং ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। বাবলু জানান, মেলায় যেহেতু প্রবেশ টিকিট নেই এবং নগরীর বাইরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ কারণে ক্রেতা দর্শানার্থীদের আর্কষণ করতে র্যাফেল ড্র এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি জানান, রোগীর চিকিৎসা, দুস্থ ও তৃণমূল নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহযোগিতা করেতে র্যাফেল ড্র থেকে অর্জিত অর্থের একটি বড় অংশ তাদেরকে দিয়ে দেওয়া হয়। এর বাহিরে মেলা আয়োজন কর্তৃপক্ষ হিসেবে আমাদের আর কোন উদ্দেশ্য নেই। তিনি বলেন, মেলা ও র্যাফেল ড্র নিয়ে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তারা না বুঝে ও জেনে এটি করছেন বলে আমরা মনে করি। তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা এনাম আহমদ চৌধুরীর স্ত্রী মারীয়াম চৌধুরী মাম্মি জানান, আমার পুত্র জটিল কিডনী রোগে আক্রান্ত। তার কিডনী অতিসত্তর প্রতিস্থাপন করা জরুরী। এর জন্য প্রয়োজন ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা। সরকার থেকে ইতিমধ্যে ৪ লক্ষ টাকার অনুদান দেয়া হয়েছে। যা দিয়ে পুরো চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়। এ জন্য তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি সর্বসম্মতভাবে একটি মেলা আয়োজনের মাধ্যমে এই অর্থ সংগ্রহের একটি মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি আশা করেন তার পুত্রের জীবন রক্ষার্থে এ ক্ষেত্রে সকলে সহযোগিতা করবেন।