স্পোর্টস ডেস্ক :
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আসন্ন দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজকে কেন্দ্র করেই এখন জাতীয় দলের যত ব্যস্ততা। অনেক প্রত্যাশার পর অসিদের যখন পাওয়াই যাচ্ছে তখন ম্যাচ দুটিকে স্মরণীয়ও করে রাখতে চায় বাংলাদেশ।
কিভাবে স্মরণীয় করা যাবে তার ব্যাখ্যা না দিলেও চলে। তবে ক্রিকেটারদের মনে যে একটা ক্ষোভ বিরাজ করছে তা অস্ট্রেলিয়ানদের উপেক্ষা!
দুর্বল বলেই পাত্তা দিতে চাইছে না যখন স্মিথরা, তখন চ্যালেঞ্জিং হিসেবেও নিয়েছেন তারা ম্যাচ দুটি। ঢাকায় ফিটনেস ক্যাম্পের পর এখন চট্টগ্রামে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। বোলিং নিয়ে কোর্টনি ওয়ালশের কারিশমা দেখানোর সুযোগ ওই সিরিজে।
ব্যাটিংয়েও চ্যালেঞ্জ জানাতে অস্ট্রেলিয়ান খণ্ডকালীন কোচ মার্ক ও’নিলের স্মরণাপন্ন। সিরিজটা তার জন্যও চ্যালেঞ্জিং। ক্রিকেটারদের ব্যাটিংয়ে কিছুটা উন্নতি ঘটল চাকরিটা পাকাও হয়ে যেতে পারে। তাইতো ব্যস্ততা তারও কম না।
চট্টগ্রামে কাজের পর সাংবাদিকদের সাথে কথাও বলেছেন এ বর্ষীয়ান কোচ। জানালেন ব্যাটিং নিয়ে স্বল্প সময়ে কিছু করার নেই। তা ছাড়া জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের এমন কোনো টেকনিক শেখানো যাবে না যেটা নিয়ে তাকে নতুন করে কাজ করে ক্যারিয়ারই হুমকির মধ্যে পড়ে। তবে মনমানসিকতায় কিভাবে উন্নতি ঘটানো যায় সে ধরনের কিছু টেকনিক তিনি জানাচ্ছেন ক্রিকেটারদের। যাতে তারা উইকেটে আরো ধৈর্যশীল হতে পারেন যাতে সে বিষয়ে উপকৃত হন।
তিনি বলেন, ‘ছেলেরা তার উইকেটের কী মূল্য, সেটা যেন বুঝতে পারে সে বিষয়ে জোর দেয়া হচ্ছে। নেটেও যাতে সোজা ব্যাটে তারা খেলেন সে মানসিকতা গড়ে তোলার ব্যাপারে চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটারেরা অনেক ট্যালেন্ট। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে তারা প্রায়ই অধৈর্য হয়ে পড়েন। যখন দেখেশুনে ক্রিজে থেকে খেলার কথা তখন আজেবাজে শট খেলে বল তুলে দিয়ে আউট। বিষয়গুলো মার্ক ও’নিলও জেনে নিয়েছেন। তাইতো এগুলো নিয়ে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘টেস্টে ধৈর্যের বিকল্প নেই। নিজের ওপর আস্থা রাখা। নিজের দুর্বল স্থানে অন্যদের সুযোগ না দেয়া। এগুলোর উন্নতির প্রয়োজন। তাহলেই তারা আরো ভালো করতে সক্ষম হবেন।’
তবে এ অসি কোচ বলেন, ‘ক্রিকেটারদের নিয়ে যতক্ষণ কাজ করার সুযোগ হয়েছে তাতে আমি বেজায় খুশি। কারণ তাদের জানার আগ্রহ রয়েছে। যা আমাকে মুগ্ধ করেছে। তারা সত্যিকার অর্থেই ভালো করছে। যে টেকনিকগুলো দেখানো হচ্ছে তা নিয়ে তারা কাজ করছেন। এবং ভালো করছেন। এভাবে এগিয়ে যেতে পারলে ভালো করবেন তারা নিশ্চিত।’
ও’নিলের একটা চ্যালেঞ্জ লোয়ার অর্ডারের খেলোয়াড়দের ব্যাটিংয়ে আরো উন্নতি ঘটানো। তিনি বলেন, ‘শেষের দিকের একজন ব্যাটসম্যানও স্কোরের উন্নতি অনেক সহায়তা করতে পারেন। অনেক সময়ে তাদের সহায়তার কারণে ম্যাচে জয় চলে আসে। ফলে তাদেরও ব্যাটিংয়ে ভালো করা গুরুত্বপূর্ণ। বেশির ভাগ সময়ে তারা বোলিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন; সময় দিতে পারেন না ব্যাটিংয়ে। কিন্তু তাদেরও ব্যাটিংয়ে সময় দিতে হবে। ম্যাচে তারাও যাতে অবদান রাখতে পারেন সে বিষয়ে আমি চেষ্টা করছি।’
কথা বলেছেন তিনি ওপেনার সৌম্য সরকারকে নিয়েও। জানালেন, সৌম্য সরকার কেন, দলের কোনো ব্যাটসম্যানেরই সমস্যা দেখছেন না। সবাই ভালো করছেন। তবে প্রয়োজন মানসিকতায় উন্নতি। তাইতো সৌম্যের স্টাইল নিয়ে আপাতত কাজ করবেন না তিনি। মারার বল মারবেন। সোজা তথা মাঝ ব্যাটে খেলবেন।’ মার্ক ও’নিলের সময় খুব বেশি নেই। মাস খানিকের মতো। মূলত এটা নিজেকে প্রমাণের জন্য যথেষ্ঠ না হলেও তার চেষ্টাতে যদি কিছু উন্নতি হয়, বোর্ড যদি খুশি হন তাহলে ব্যাটিং কোচ হিসেবে চাকরিটা পাকাও হয়ে যেতে পারে।
ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এটাও তিনি জানালেন হাসি মুখেই। তাইতো ব্যস্ততা তার একটু বেশিই ক্রিকেটারদের সময় দেয়ার ব্যাপারে। কারণ একটা জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করার অর্থ নিজেকেও উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়া এটা কী আর বলার অপেক্ষা রাখে।