কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েক দিনের উত্তেজনার মাঝে শনিবার (২৯ জুলাই) বেলা আড়াইটায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরের সুজা মেমোরিয়াল কলেজের জুনিয়র (একাদশ) শ্রেণির মারপিটে সিনিয়র (দ্বাদশ শ্রেণির) চার ছাত্র আহত হয়েছে। পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়।
খোঁজ নিয়ে ও শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, সুজা মেমোরিয়াল কলেজে গত কয়েকদিন ধরে দু’দল ছাত্রের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পুলিশ ফাঁড়ির হস্তক্ষেপে প্রাথমিকভাবে উত্তেজনা কমলেও শনিবার কলেজের ক্লাস শেষে রাবার বাগান এলাকায় বেলা আড়াইটায় সুজা মেমোরিয়াল কলেজের একাদশ শ্রেণির কয়েকজন ছাত্র মিলে অতর্কিতভাবে দ্বাদশ শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রকে মারপিট করে। এ ঘটনায় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র হিফজুর রহমান, ফাহিম আহমদ, দেলোয়ার হোসেন ও আজিজুল হক আহত হয়েছে। আহত সবার বাড়ি কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নে। ঘটনার খবর পেয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-সহকারী পরিদর্শক আয়াছ মাহমুদ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আহতদের উদ্ধার করেন।
আহত দ্বাদশ শ্রেনির ছাত্র হিফজুর রহমান ও ফাহিম আহমদ বলেন, সিনিয়রিটি ও জুনিয়রিটি নিয়ে স্থানীয় কতিপয় ছাত্রদের সাথে শরীফপুর ইউনিয়ন থেকে আগত দ্বাদশ শ্রেনির ছাত্রদের বিরোধ চলছিল। এ বিরোধে ৩/৪ দিন আগেও উত্তেজনা সংঘর্ষের পর্যায়ে গেলে পুলিশি হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণ হয়েছিল। শনিবার আবার দ্বাদশ শ্রেণিতে এসে একাদশ শ্রেণির কয়েকজন ছাত্র বেঞ্চের উপর পা তুলে বসে। এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ক্লাস শেষে বেলা আড়াইটায় কলেজ থেকে বাড়ি ফিরার পথে কলেজের অনতিদূরে রাবার বাগান এলাকায় স্থানীয় একাদশ শ্রেনির ছাত্র মান্না ,কয়েছ,সাহান ও অন্য কলেজের একাদশ শ্রেনির শাকিলের সাথে মিলে দ্বাদশ শ্রেনিল ছাত্র জামিল, মাহিন, হাসান, মেহেদী, রাহিম ঢালী মিলে লাঠি পেটা করে। আহতরা আরও জানান, দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে না আসলে তাদেরকে বেদড়কভাবে পেটাতো। আহতদের মাঝে হিফজুর রহমানের আঘাত বেশী।
শনিবারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ সহকারী পরিদর্শক আয়াছ মাহমুদ বলেন, কয়েকদিন আগেও এ ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হলে তাদের ( পুলিশি) হস্তক্ষেপে আর মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুনাব আলী ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি কলেজ অধ্যক্ষ ও শমসেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলবেন। তিনি আরও বলেন, গত বছরও তার ইউনিয়নের নছিরগঞ্জ এলাকার এক ছাত্রকে শমসেরনগরের স্থানীয় কতিপয় ছাত্র বেদড়কভাবে মারপিট করেছিল। এভাবে চলতে আগামীতে এ কলেজে তাদের এলাকার ছাত্র ভর্তি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।
সুজা মেমোরিয়াল কলেজ অধ্যক্ষ ম মুর্শেদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি কলেজের বাইরে ঘটেছে। তার পরও তিনি খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
শমসেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ কলেজে দূর দুরান্তের ছাত্রÑছাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে ভবিষ্যতে ছাত্র ভর্তি নিয়ে সমস্যা হতে পারে। তাই বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে রবিবার সকাল ১০টায় সুজা কলেজে উভয় পক্ষের ছাত্রদের নিয়ে সামাজিক বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।