কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
কুলাউড়া উপজেলার কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের ৬ গ্রামের ৭ হাজার মানুষ বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিশেষ করে পিএসি, জেএসি ও বাৎসরিক পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা পড়ে বিদ্যুতের এই বিড়ম্বনায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া পৌরসভার দক্ষিণ লস্করপুর গ্রামের রাস্তার পাশে ২৫০ কেভির একটি ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে। এই ট্রান্সমিটার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়েছে হরিপুর, করের গ্রাম আংশিক, বাগাজুড়া, মিনারমহল, দাসেরমহল, হাসনপুর আংশিকসহ ৬ গ্রামে। ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় লেখা পড়া করে। সন্ধ্যা হলেই শুরু হয় লো-ভোল্টেজ। বিদ্যুতের নিভু নিভু আলোর কারণে বিড়ম্বনায় পড়ে শিক্ষার্থীরা। তাদের পড়ালেখায় চরম ব্যাঘাত ঘটে। বিদ্যুতের বিড়ম্বনার কারণে তাদের সব সময় কুপিবাতি জ্বালিয়ে রাতে পড়াশোনা করতে হয়। এলাকাবাসীর দাবি, কুলাউড়া ইউনিয়নের দাসেরমহল বাজারে যদি একটি ট্রান্সমিটার বসানো যায়, তাহলে ওই ৬টি গ্রামের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও বিদ্যুৎ-সুবিধা পাবে। করের গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা শাম্মি হতাশা ব্যক্ত করে বলে, ‘বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের কারণে আমরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছি না। আমাদের উন্নত পড়ালেখার কথা চিন্তা করে এই বিদ্যুৎ সমস্যার যেন অচিরেই সমাধান হয়, সেজন্য সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’ মিনারমহল গ্রামের বাসিন্দা কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রাহিন আহমদ বলেন, ‘প্রতিদিন রাতে পড়ার টেবিলে বই নিয়ে বসলেই শুরু হয় যত জটিলতা। বিদ্যুতের পর্যাপ্ত ভোল্টেজ না থাকায় আমাদের পড়ালেখা করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।’ হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুল¬াহ বলেন, ‘এই এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে এই বিদ্যুৎ সমস্যা চলে আসছে। বিদ্যুৎ লাইনগুলো খুবই দুর্বল। অনেক সময় আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে এই লাইনগুলো সংস্কার করি। এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন এ ব্যাপারে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন।’ এ ব্যাপারে হাসনপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজসেবক সুফিয়ান আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই এলাকার বিদ্যুৎ সমস্যা অনেক দিনের। লাইনগুলো খুবই দুর্বল, যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অনেক সময় লাইনগুলো ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। তখন তাৎক্ষণিক পিডিবি কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয় না, বরং ঘটনা ঘটার দুই দিন পর তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এবং এসে তারা লাইনের জাম্পার কেটে দেন। আমরা এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় লিখিতভাবে আবেদন করেছি পিডিবি কর্তৃপক্ষের কাছে কিন্তু তারা কোনো সুরাহা দেননি।’ তিনি বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, বিদ্যুৎ লাইনগুলো যেন পুনঃসংস্কার করা হয়। দাসেরমহল বাজারে একটি ট্রান্সমিটার বসানো হলে এলাকাবাসীর কষ্ট অনেকটা লাঘব হবে।