কাজিরবাজার ডেস্ক :
শর্তসাপেক্ষে পৌর নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে সেজন্য ভোট ১৫ দিন পেছানোসহ বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা দলটি।
এ ছাড়া অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে দলটির পক্ষ থেকে ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ড’ তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানার ইউএনও এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি চেয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দলটির মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
তিনি বলেন, ‘আগামী জানুয়ারি মাসের শুরুতে ভোটার তালিকায় নতুন ৫০ লাখ ভোটার যোগ হওয়ার কথা। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হলে নতুন ভোটাররা ভোট দিতে পারবে না। ভোটগ্রহণ ১৫ দিন পিছিয়ে দেয়া হলে এরা ভোট দিতে পারবে।’
ভোটের তারিখ ১৫ দিন পিছিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণার পাশাপাশি বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেফতার’ বন্ধ করা এবং কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান তিনি। একই সাথে সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো খুলে দেয়ার কথা বলেন বিএনপির এই মুখপাত্র।
রিপন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।’
গত বুধবার গুলশানে নিজের কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরপর বৃহস্পতিবার তিনি বসেন ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে। এসব বৈঠকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের দাবিতে বিএনপি সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও আগে-পরে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনেই অংশ নিয়েছে। সর্বশেষ গত এপ্রিলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলেও ভোটগ্রহণের মাঝপথে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে তা বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীরা।
নির্বাচন কমিশনকে ‘আজ্ঞাবহ’, ‘মেরুদণ্ডহীন’ আখ্যা দিলেও রিপন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আর সরকার মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তারপরও আশা করছি এই নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা এবং জনগণের ভোটাধিকার আকাক্সক্ষাকে পূরণ করার জন্য এই নির্বাচনে শর্তসাপেক্ষে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পৌরসভা নির্বাচন হতে যাচ্ছে দলের মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীকে। ২৩৬টি পৌরসভায় এ নির্বাচন করতে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন রেখে ইতোমধ্যে তফসিল দিয়েছে ইসি। সে হিসাবে নির্বাচন হতে আর বেশি দেরি নেই। এতদিন নির্বাচনে অংশ নেয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকার পর শুক্রবার বিএনপির পক্ষে ‘শর্তসাপেক্ষে’ নির্বাচন করার ঘোষণা এলো।