১ রানে মুশফিকদের হারালো তামিম বাহিনী

21

স্পোর্টস ডেস্ক :
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের তৃতীয় ম্যাচটিও শেষ ওভারে গড়ালো। উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে তামিম ইকবালের 2015_11_23_19_04_29_EkryXbmbYy9RovmJlE0qC0pOJCeNhi_originalচিটাগং ভাইকিংস মাত্র ১ রানে হারালো মুশফিকুর রহিমের সিলেট সুপারস্টারসকে। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পেল ভাইকিংস। আর নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরে বিপিএল যাত্রা করল সিলেট।
নির্ধারিত ওভার শেষে চিটাগং ভাইকিংসের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রান। দলের হয়ে অর্ধশতক হাঁকান তামিম ইকবাল এবং ইয়াসির আলি। জবাবে নির্ধারিত ওভারে ১৭৯ রানে থেমে যায় সিলেটের ইনিংস। দলের হয়ে অর্ধশতক হাঁকান মুনাবেরা। অর্ধশতক হাঁকিয়ে দারুণ একটি ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন দলপতি মুশফিক।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত চিটাগং ওপেনার লঙ্কান তারকা দিলশান ফিরে যান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দিলশানকে শূন্য রানে মুমিনুল হকের তালুবন্দি করে ফিরিয়ে দেন সুবাশিষ রায়। প্রথম ম্যাচের পর এ ম্যাচেও অর্ধশতক হাঁকান তামিম ইকবাল (৬৯)। অজন্তা মেন্ডিসের বলে মোহাম্মদ শহীদের তালুবন্দি হওয়ার আগে তামিম ৪৫ বল মোকাবেলা করে ৬টি চার আর ৪টি ছক্কা হাঁকান।
দলীয় ১০৮ রানের মাথায় মুনাবেরার বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন আনামুল হক (৩)। মোহাম্মদ শহীদের ১৮তম ওভারের প্রথম বলে বিদায় নেন জীবন মেন্ডিস। উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে জীবন ১১ বলে দুই ছক্কায় ২০ রান করেন।
ব্যাট হাতে অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন ইয়াসির আলি। ৫২ বলে একটি চার আর ৪টি ছক্কায় তিনি ৬৩ রান করে শেষ বলে রান আউট হন। জিয়াউর রহমান ৭ বলে একটি করে চার আর ছক্কায় করেন অপরাজিত ১৫ রান।
সিলেটের হয়ে শহীদ, সুবাশিষ, মেন্ডিস আর নাজমুল একটি করে উইকেট দখল করেন।
১৮১ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ের উদ্বোধন করতে নামেন জুনায়েদ সিদ্দিকী এবং দিলশান মুনাবেরা। মোহাম্মদ আমিরের প্রথম ওভারে ৫ রান তুলে নেন দুই ওপেনার। তবে, দ্বিতীয় ওভারে তিলকারতেœ দিলশানকে আক্রমণে আনেন তামিম। আর সে ওভারের ছয় বলে ছয়টি বাউন্ডারি হাঁকান দিলশান মুনাবেরা।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে আউট হন জুনায়েদ সিদ্দিকী। শফিউল ইসলামের বলে বোল্ড হওয়ার আগে এ ওপেনার করেন ১৩ বলে ৫ রান। তবে, ব্যাটে ঝড় তুলে অর্ধশতক তুলে নেন লঙ্কান তারকা মুনাবেরা। মাত্র ৩০ বলে ১৩টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কা হাঁকিয়ে ৬৪ রান করেন তিনি। অষ্টম ওভারে সাঈদ আজমলের বলে মেন্ডিসের তালুবন্দি হন তিনি।
একই ওভারে মুমিনুল হককে (২ রান) এলবির ফাঁদে ফেলেন আজমল।
এরপর রানের চাকা ঘুরিয়ে নিয়ে চলেন মুশফিক এবং নুরুল হাসান। এ জুটি থেকে আসে আরও ৫৫ রান। দলীয় ১৩১ রানের মাথায় ১৫তম ওভারে শপিউল ফিরিয়ে দেন নুরুল হাসানকে। এলবির ফাঁদে পড়ার আগে নুরুল হাসান ২০ বল মোকাবেলা করে তিনটি বাউন্ডারি আর একটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩২ রান করেন।
মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন নাজমুল হোসেন মিলন। ১৪ রান যোগ হতেই মুশফিককে রেখে বিদায় নেন ব্যক্তিগত ৯ রান করা মিলন। ১৭তম ওভারে শফিউলের দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড হন তিনি। ১৮তম ওভারে রান আউট হয়ে ফেরেন ৪ বলে ৩ রান করা মোহাম্মদ শহীদ।
এক প্রান্তে রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন অর্ধশতক হাঁকানো দলপতি মুশফিকুর। ৩৪ বল মোকাবেলা করে এ টাইগার রান মেশিন ৩টি চার আর দুটি ছক্কায় করেন ৫০ রান। অপরাজিত থেকে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
ভাইকিংসের হয়ে ৪ ওভার বল করে ২৫ রান খরচায় সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট দখল করেন শফিউল ইসলাম। পাকিস্তানি স্পিনার সাঈদ আজমল ৪ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট। ৪ ওভারে ১৯ রান খরচায় আরেক পাকিস্তানি বোলার মোহাম্মদ আমির উইকেট শূন্য থাকেন। তাসকিন ৪ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে উইকেট পাননি।
এর আগে ২৬ মিনিট বিলম্বে বিপিএলের তৃতীয় ম্যাচের টস অনুষ্ঠিত হয়। টসের নির্ধারিত সময়ে চিটাগং ভাইকিংস অধিনায়ক তামিম মাঠে এসে ম্যাচ রেফারির সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকলেও সেখানে দেখা যায়নি প্রতিপক্ষের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকে। তবে, টস বিলম্ব নিয়ে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, সিলেট সুপার স্টারসের দুই খেলোয়াড়ের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) নিয়ে জটিলতা থাকায় নির্ধারিত সময়ে টস অনুষ্ঠিত হয়নি।
পরে, টস জিতে দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেট দলপতি মুশফিক ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। দুপুর দুইটায় চিটাগং ভাইকিংস ও সিলেট সুপারস্টারসের মধ্যকার ম্যাচটি ২০ মিনিট বিলম্বে মাঠে গড়ানোর কথা থাকলেও ১ ঘণ্টা ৭ মিনিট পর শুরু হয়। ব্যাট হাতে নামেন চিটাগংয়ের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও তিলকারতেœ দিলশান। এর আগে মাঠে নেমেও তারা আবারো ড্রেসিং রুমের পথে ফিরে যান।
দিনের অপর ম্যাচে সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স লড়বে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল বুলসের বিপক্ষে।
সিলেট সুপারস্টারস: মুশফিকুর রহিম, নাসুম আহমেদ, জুনায়েদ সিদ্দিকী, অজন্তা মেন্ডিস, মোহাম্মদ শহীদ, মমিনুল হক, সুবাশিষ রায়, দিলশাল মুনাবেরা, নাজমুল হোসাইন, নাজমুল হোসেন মিলন ও নুরুল হাসান।
চিটাগং ভাইকিংস: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), তাসকিন আহমেদ, জিয়াউর রহমান, এনামুল হক বিজয়, শফিউল ইসলাম, ইয়াসির আলি, আসিফ আহমেদ রাতুল, মোহম্মদ আমির, জীবন মেন্ডিস, সাঈদ আজমল ও দিলশান।