স্পোর্টস ডেস্ক :
টাইগারদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৩৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে
যায়। দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচটি জিতে জিম্বাবুয়ে সফরের একমাত্র জয় নিয়ে দেশে ফিরবে। এক বল হাতে রেখে ৩ উইকেটের জয় পায় অতিথিরা।
দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টির শেষ ম্যাচে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে ভর করে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১৩৫ রান। বিজয় ৫১ বলে ৪৭ রান করে শেষ ওভারের দুই বল বাকি থাকতে রান আউট হন।
টাইগারদের ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ৪১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা তামিম ইকবাল এবং ৫ ম্যাচ খেলা ইমরুল কায়েস।
ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নেমে দারুণ শুরু করেন টাইগারদের দুই ওপেনার তামিম এবং ইমরুল। তবে, ইনিংসের চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে এলটন চিগুম্বুরার শিকারে ফেরেন তামিম। ব্যক্তিগত ২১ রান করে মাদজিভার তালুবন্দি হন এ বাঁহাতি ওপেনার। ১৫ বলে একটি চার আর দুটি ছক্কায় তামিম তার ইনিংসটি সাজান। দলীয় ৩৪ রানের মাথায় ওপেনার তামিম ইকবাল বিদায় নিলে ব্যাট হাতে নামেন এনামুল হক বিজয়। আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েসের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তিনি। তবে, পঞ্চম ওভারে ব্যক্তিগত ১০ রান চিসোরোর বলে উইলিয়ামসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইমরুল কায়েস।
দুই ওপেনারকে হারিয়ে এগুতে থাকে টাইগারদের ইনিংস। দলীয় ৩৪ রানের মাথায় তামিম আর ৩৫ রানের মাথায় ইমরুল কায়েস বিদায় নেন। এরপর স্বাগতিকদের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। দলীয় ইনিংসের নবম ওভারে গ্রায়েম ক্রেমারের প্রথম বলে উইলিয়ামসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ৯ রান করা মুশফিক।
দলীয় ৫৯ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তৃতীয় ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। তবে, ১৫তম ওভারে গ্রায়েম ক্রেমারের বলে এলবির ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন সাব্বির রহমান। আউট হওয়ার আগে ১৮ বলে ১৭ রান করেন তিনি। বিজয়ের সঙ্গে স্কোরবোর্ডে আরও ৩৯ রান যোগ করেন সাব্বির। সাব্বির-বিজয়ের গুরুত্বপূর্ণ ৩৯ রানের জুটির পর এগিয়ে চলছিল বাংলাদেশের ইনিংস। তবে, ব্যক্তিগত ৩ রান করে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন নাসির হোসেন। এরপর দ্রুত বিদায় নেন ৮ রান করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রথম বলেই মাদজিভার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। আরাফাত সানি ফেরেন ৫ রান করে।
অতিথিদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন রেগিস চাকাভা আর সিকান্দার রাজা। বাংলাদেশের হয়ে বোলিং শুরু করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য মেলে টাইগার দলে। আল আমিনের করা প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন ব্যক্তিগত ৫ রান করা সিকান্দার রাজা। পরের বলেই উইলিয়ামসকে বোল্ড করেন আল আমিন।
দলীয় ৭ রানের মাথায় দুই সফরকারী ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন আল আমিন। আর তৃতীয় ব্যাটসম্যানকে তুলে নিতে মুস্তাফিজ ফিরিয়ে দেন রেগিস চাকাভাকে। সাব্বির রহমানের তালুবন্দি হয়ে ফেরার আগে চাকাভা করেন ৪ রান।
দলীয় ১৫ রানে টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপাকে পড়া জিম্বাবুয়ে তাদের চতুর্থ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে দলীয় ৩৩ রানের মাথায় রান আউট হয়ে ফেরেন ১৫ রান করা ক্রেইগ আরভিন। স্কোরবোর্ডে ৬ রান যোগ হতেই আরাফাত সানি শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেন এলটন চিগুম্বুরাকে।
দলীয় ৩৯ রানের মাথায় টপঅর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ধুঁকতে থাকে জিম্বাবুয়ে। তবে, সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ম্যালকম ওয়ালার এবং লুক জঙ্গো। এ দুই ব্যাটসম্যান ৫৫ রানের জুটি গড়েন। জঙ্গো আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন।
শেষ ওভারে ১৮ রান দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের। ম্যালকম ওয়ালারকে শেষ ওভারের প্রথম বলে ফিরিয়ে দেন নাসির হোসেন। বিদায় নেওয়ার আগে ২৭ বলে দুইটি চার আর তিনটি ছক্কায় ইনিংস সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন তিনি।
নাসিরের পরের বলে ছক্কা হাঁকান মাদজিভা। তৃতীয় বলে দুই রান নেন তিনি। চতুর্থ বলে আবারো চার মারেন মাদজিভা। পঞ্চম বলে লংঅনে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ১৯ বলে ২৮ রান করে অপরাজিত থাকা মাদজিভা।
বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, আরাফাত সানি, মুস্তাফিজুর রহমান, আল আমিন ও এনামুল হক বিজয়।
জিম্বাবুয়ে একাদশ: এলটন চিগুম্বুরা (অধিনায়ক), সিকান্দার রাজা, রেগিস চাকাভা, টেন্ডাই চিসোরো, গ্রায়েম ক্রেমার, ক্রেইগ আরভিন, লুক জঙ্গো, নেভিল মাদজিভা, তিনাশে পানিয়াঙ্গারা, ম্যালকম ওয়ালার, শন উইলিয়ামস।