কাজিরবাজার ডেস্ক :
নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে বাংলাদেশের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। নূর হোসেনকে হস্তান্তর করার জন্য বিএসএফ রাত সোয়া ১১টায় বেনাপোল স্থল বন্দরে পৌঁছায়। তারপর বেনাপোল সীমান্তে ব্যাপক প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে নূর হোসেনকে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। বেনাপোল স্থলবন্দরে বিএসএফএর কাছ থেকে নূর হোসেনকে গ্রহণের সময় উপস্থিত ছিলেন সাত খুনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মামুনুর রশীদ। বেনাপোলের ইমিগ্রেশনে যশোরের পুলিশ সুপার অনিসুর রহমান, বিজিবি কর্মকর্তা মেজর লিয়াকত আলী, ইএনও আব্দুস সালাম, পোর্ট থানার ওসি অপূর্ব হাসান।
তবে নূর হোসেনকে হস্তান্তরের ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে উপস্থিত কোন পুলিশ কর্মকর্তা কোন তথ্য সাংবাদিকদের দেননি। হস্তান্তরের পর দ্রুত হেলমেট, বুলেট প্র“ফ জ্যাকেট পরিয়ে নূর হোসেনেেকএকটি গাড়িতে তুলে নিয়ে দ্রুত বন্দর ত্যাগ করে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য ও কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত ২৭শে এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে কাউন্সিলর (প্যানেল মেয়র) নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইবরাহিম একসঙ্গে অপহৃত হন।
৩০শে এপ্রিল বিকালে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয় জন এবং ১লা মে সকালে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ইটবোঝাই সিমেন্টের ব্যাগ দিয়ে বাঁধা অবস্থায় নদীতে ডোবানো হয়েছিল লাশগুলো। পা ছিল দড়ি দিয়ে বাঁধা। হাত পেছনে দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল। মুখমণ্ডল পলিথিন দিয়ে গলার কাছে বাঁধা ছিল। পেট ধারালো অস্ত্র দিয়ে সোজাসুজি ফাড়া ছিল।
লাশ উদ্ধারের পর ওই বছরের ২ মে কালকাতায় পালিয়ে যান ঘটনার নেপথ্যের খলনায়ক নূর হোসেন। পরে তিনি গ্রেফতার হন কলকাতা পুলিশের হাতে।
অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ দায়ে তার বিরুদ্ধে ভারতীয় আইনে মামলা হয়। পরে ভারতের আদালত তাকে বাংলাদেশে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার মেয়ের জামাই তারেকসহ র্যাবের তিন কর্মকর্তা গ্রেফতার হন।
নারায়ণগঞ্জে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে হত্যার পর ভারতে পালিয়ে ছিলেন নূর হোসেন। এরপর কলকাতার দমদম এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তার দুই সহযোগীকেও গ্রেফতার করে ভারতীয় অ্যান্টি টেরোরিস্ট বাহিনী।