বালাগঞ্জ থেকে ভাড়ায় নিয়ে নোহা গাড়ীর চালক খুন, শায়েস্তাগঞ্জে মামলা

70

বালাগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
বালাগঞ্জ থেকে ভাড়ায় নিয়ে চালককে খুন করে নোহা গাড়ী (মাইক্রোবাস) ছিনতাইয়ের ঘটনায় অবশেষে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১২ এপ্রিল মামলাটি দায়ের করেন নিহত চালক বিশ্বজিৎ দাস বিষুর পিতা মন্টু দাস। মামলা নং-০২। মামলা করতে বিলম্ব হওয়ার ব্যাপারে নিহতের পিতা মন্টু দাস বলেন আমরা বালাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করছি এবং ঘটনাস্থল শায়েস্তাগঞ্জ থানা এলাকা হওয়ার জটিলতায় মামলা করতে কিছুটা বিলম্ব হয়ে গেছে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে ৫ এপ্রিল বেলা ১২টার দিকে  সিলেট-ছ ১১-০৭২১ নাম্বারের নোহা গাড়ীতে করে চালক বিশ্বজিৎ দাস বিষু (২৬) অজ্ঞাতনামা কয়েকজন যাত্রী নিয়ে ওসমানীনগর থানার গোয়ালা বাজার থেকে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ঐ দিন রাত ৮টার পর বিষুর অবস্থান জানার জন্য মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তার ব্যবহৃত দুটিই সিম (০১৭৩৭-৪১০৯২৬/০১৭১১-০৬২১৯৩) বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন ৬ এপ্রিল সোমবার সকালে বালাগঞ্জ থানায় জিডি করেন নোহা গাড়ীর মালিক শফিকুল ইসলাম আরক। অপরদিকে ৬ এপ্রিল ফজরের নামাজ শেষে স্থানীয় মুসল্লীগন হবিগঞ্জের সায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের দেউন্দি এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পার্শে বিষুর লাশটি অজ্ঞাত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। শায়েস্তাগঞ্জ থানায় খবর দেয়া হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। বিষুর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম হবিগঞ্জ শাখায় লাশটি হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে অজ্ঞাত অবস্থ্য়া লাশটি (দাহ না করে) আংশিক ভাবে সমাহিত করে রাখা হয়। ৬ এপ্রিল সন্ধার দিকে বালাগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম তালুকদার শায়েস্তাগঞ্জ থানার একটি অজ্ঞাত লাশের ছবি ফেইসবুকে দেখতে পেয়ে নোহা গাড়ীর মালিক শফিকুল ইসলাম আরক এবং স্থানীয় শ্রমিকদেরকে দেখালে তারা বিষুর লাশ শনাক্ত করেন। হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে ৮ এপ্রিল বিষুর লাশ বালাগঞ্জে এনে বিকেল ৫টার দিকে চাঁনপুর শশ্মান ঘাটে তার অন্তোষ্টিক্রীয়া সম্পন্ন করা হয় হয়। সংশি¬ষ্ট সূত্রগুলোর দাবী নোহা ড়াড়ীটি ছিনতাই করার জন্য পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক বিষুকে খুন করা হয়েছে। ঐ সূত্রটি আরও জানায় খুনিরা বিষুর পূর্ব পরিচিত ছিল। খুনি চক্রের সদস্যরা চালক বিষুর সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং বিষু যাতে বিষয়টি টের না পায় সেজন্য তারা বিষুর গাড়ী বিভিন্ন সময় ভাড়া করে নিত। বিষুর কয়েকজন সহকর্মী জানান বিষু বলেছিল তার কয়েকজন পরিচিত বন্ধু-বান্ধব তাকে নিয়ে কমলগঞ্জের ‘হামহাম’ জল প্রভাত দেখতে যাবে। সে অনুযায়ী ৫ এপ্রিল গোয়ালা বাজার থেকে তাদেরকে নিয়ে যায়। অপর একটি সূত্র বলছে বিষুকে যারা হত্যা করে গাড়ী ছিনতাই করেছে ঐ চক্রের সাথে বালাগঞ্জের কয়েকজন উঠতি ছিনতাইকারী জড়িত রয়েছে। যারা অতীতে এ ধরনের আরও কয়েকটি ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তাদের মধ্যে কয়েকজন সিলেট শহরে বসবাস করছে এবং অন্যরা বালাগঞ্জের আশেপাাশের গ্রাম গুলোতে বসবাস করে আসছে। ঐ সূত্রটির দাবী এসব ছিনতাইকারীদেকে গ্রেফতার করা হলেই এর রহস্য বেরিয়ে আসবে। নোহা গাড়ীর মালিক শফিকুল ইসলাম আরক বলেন যে দিন বিষু নিখোঁজ হয় ঐ দিন সকালে সে সিলেট এয়াপোর্টে একটি ট্রিপ নিয়ে যায়। বারটার মধ্যে চলেও আসে। এরপর সে আমার বাসায় যায় এবং আমার পাশেই বসেই চা খাচ্ছিল। হঠাৎ তার মোবাইলে কে যেন ফোন দেয়। ফোন রিসিভ করেই বিষু বলে “মামু আইছি”। এ কথা বলেই সে চলে যায়। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি মো: ইয়াছিনুল হক মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যেহেতু ঘটনাস্থল আমার থানা এরিয়াতে সে জন্য আমার থানায়ই মামলাটি করা হয়েছে। খুনিদের গ্রেফতার ও ছিনতাই হওয়া গাড়ী উদ্ধার করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীদের গ্রেফতারের সাধ্যমত চেষ্টা করছি।