স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট-ঢাকা রুটে বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের উদ্বোধন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এমপি।
বিমানের অনেক উন্নতি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, অনেক নতুন বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে। যে কারণে আমরা ভাল সেবা পাওয়ার পাশাপাশি সেবার মানও বৃদ্ধি পাবে।
গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ফ্লাইট দুবাই নিয়ে অভিযোগ এসেছে। এটা খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া অনেকগুলো প্রস্তাবনাও এসেছে এগুলো বিবেচনা করা হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, সারাদেশে অভ্যন্তরীন ফ্লাইট ৭টি এয়াপোর্টে বিমান চলাচলের উদ্বোধন করা হয়েছে। সিলেট-লন্ডন কার্গো সার্ভিস শিগগিরই চালু করা হবে।
রশেদ খান মেনন বলেন, ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ফ্লাইট দুবাই’র অভিযোগের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে ফ্লাইট জটিলতার কারণে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গতকাল সোমবার সকাল ১১ টার ফ্লাইটও বাতিল করে দিয়েছে ফ্লাই দুবাই। এ নিয়ে ওসমানী বিমানবন্দরে গতকাল সকালে যাত্রীরা হট্টগোল করেছেন বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর সূত্র।
বিমানযাত্রী জকিগঞ্জের বাবুল জানান, বিমানটি একদম বাজে। ওটা ফ্লাইট তো করেই নি। উল্টো যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন কর্তৃপক্ষ। এসময় যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে নানাভাবে বুঝিয়ে তাদের শান্ত করা হয়।
শুরুর পরপরই সিলেট থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সিলেটবাসীর মধ্যে। তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্নও ভঙ্গ হতে চলেছে। তারা বিষয়টিকে জটিলতা নয়, ষড়যন্ত্রের আভাস হিসেবেই দেখছেন। যদিও তাদের এ দাবি অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে সিলেট বিমানবন্দর ও ‘ফ্লাইট দুবাই’ কর্তৃপক্ষের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চলছে।
সূত্র জানায়, উদ্বোধনী ফ্লাইটের পর ৪ দিন ধরে ওসমানীতে ফ্লাইট দুবাইর কোনো বিমান না নামায় যাত্রীদের বিকল্প ব্যবস্থায় ঢাকায় নিয়ে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা থেকে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারছে প্রতিষ্ঠানটি। আগে থেকে নির্ধারিত থাকায় যাত্রীদের ফ্লাইট সিলেট থেকে দিতে না পারায় বেকায়দায় পড়ে তারা। প্রতিষ্ঠানটি যাত্রীদের সিলেট আনা নেয়া করছে কানেকটিং ফ্লাইট ও বাসে। এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমস্যা দেখা দেয়ায় অন্য বিমান সংস্থার ওপরও তার প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এটি সিলেটে তাদের ফ্লাইট পরিচালনায় নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন।
সূত্র জানায়,ওসমানী বিমানবন্দরে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ফ্লাইট গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের অনুমতি রয়েছে। ফ্লাই দুবাই-রিজেন্টের মধ্যে কো-শেয়ারে ফ্লাইট পরিচালনা করতে চাইছে। কিন্তু বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের যুক্তি হচ্ছে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের জন্য তাদের রেগুলেটরি বডি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। তবে ফ্লাইট দুবাই কো-শেয়ারের মাধ্যমে ফ্লাইট চালাতে চাইছে। যা নীতিমালা অনুমোদন করে না।
প্রথম অবস্থায় রবি ও বৃহস্পতিবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৫ দিন ওসমানী থেকে ফ্লাই দুবাইর ফ্লাইট পরিচালনার কথা। তবে গত শুক্র ও শনিবার ওসমানী থেকে ফ্লাইট দুবাইয়ের সরাসরি ফ্লাইট দেয়া হয়নি। শনিবার বাসে করে ফ্লাই দুবাইর ১৬৪ যাত্রী জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবারও সিলেটের যাত্রীদের রিজেন্টের কানেকটিং ফ্লাইটে করে ওসমানী থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ফ্লাই দুবাইর সিলেট স্টেশন ম্যানেজার মাসুম আহমদ বলেন, শুক্র ও শনিবার ওসমানীতে ফ্লাইট দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইট অবতরণ করার কথা থাকলেও দুইদিনই ঢাকার শাহজালালে অবতরণ করেছে। কেন ওসমানীতে ফ্লাইট অবতরণ করছে না এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। শুক্রবার রিজেন্ট এয়ারওয়েজে এবং শনিবার বাসে যাত্রীদের ঢাকায় পাঠানো হয়। তিনি জানান, সিভিল অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, অনুমতি ছাড়া কাউকে কো-শেয়ারে ফ্লাইট পরিচালনা করতে দেয়া হবে না।