কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট চট্ট-৭০৭ শাখার অন্তর্ভূক্ত কানাইঘাট দক্ষিণ বাজার শাখার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবদমান দু’গ্র“পের মধ্যে গতকাল শুক্রবার রাতে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন চালক আহত হয়েছেন। এ নিয়ে উপজেলা সদরে অটোরিক্সা চালকদের দু’গ্র“পের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে যেকোন সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ৭০৭ কানাইঘাট দক্ষিণ বাজার শাখার অটোরিক্সা চালকদের প্রত্যক্ষ ভোটে স্ট্যান্ডের শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে অধিকাংশ চালক দাবী জানিয়ে আসছিলেন। অপরদিকে স্ট্যান্ডের দায়িত্বে থাকা একটি গ্র“প নির্বাচনের বিরোধিতা করে আসছিল। এ নিয়ে অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেটের-৭০৭ শাখার নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি দক্ষিণ বাজার শাখার পাল্টাপাল্টি কমিটি দেয়ার পর পুণরায় বিলুপ্ত করে শাখার নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি উপদেষ্টা কমিটি ও শাখার নতুন কমিটির অনুমোদন দেন। স্ট্যান্ডের আধিপত্য নিয়ে পূর্বের কমিটির সাথে নতুন কমিটির দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও স্ট্যান্ডের চালকদের নিয়ে প্রশাসনিকভাবে সমঝোতার মাধ্যমে স্ট্যান্ড পরিচালনার লক্ষ্যে আ’লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বৈঠক করেন। গতকাল শুক্রবার স্ট্যান্ডের নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রাত ৭টার দিকে উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরী, পৌর আ’লীগের আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন সহ আ’লীগ, জাপার নেতারা এবং শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ ও দক্ষিণ বাজার অটোরিক্সা স্ট্যান্ডের চালকদের নিয়ে স্থানীয় ইউনিক কমিউনিটি সেন্টারে বৈঠকে বসেন। এক পর্যায়ে অধিকাংশ শ্রমিক স্ট্যান্ডের নির্বাচনের পক্ষে মত প্রকাশ করলে কিভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এ নিয়ে ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরী, আ’লীগ ও জাপা এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দক্ষিণ বাজার শাখার শ্রমিক নেতাদের নিয়ে নির্বাচনের ফর্মূলা তৈরি করে হলের ভিতরে গিয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানানোর সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে নির্বাচনের পক্ষে এবং বিপক্ষে চালকদের মধ্যে চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয়। এক পর্যায়ে দু’গ্র“প শ্রমিকদের মধ্যে হলের ভিতরে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরী উভয় পক্ষকে নির্বৃত্ত করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হলে পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রায় আধাঘন্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সংঘর্ষের সময় বিদ্যমান স্ট্যান্ডের চালকরা একে অপরকে মোকাবিলা করার জন্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হলে বেশ কয়েকজন অটোরিক্সা চালক আহত হন। আহতদের মধ্যে হারুন রশিদ ও হারিছ আহমদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ নিয়ে দু’গ্রপ শ্রমিকদের মধ্যে মারমুখী অবস্থান ও পুনরায় সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিলে ঘটনাটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং স্ট্যান্ডের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অটোরিক্সা চালকদের মতামতের ভিত্তিতে যে কোন ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরী স্ট্যান্ডের অটোরিক্সা চালকদের আশ্বাস প্রদান করলে পরিস্থিতি রাত সাড়ে ৯টার দিকে শান্ত হয়। ওসি জানিয়েছেন পরিস্থিতি পুলিশের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।