আশা জাগিয়ে লংকানদের হার

55

australia_win_bg_631433088স্পোর্টস ডেস্ক :
হাইভোল্টেজ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ছুড়ে দেওয়া ৩৭৭ রানের বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে শ্রীলংকার ইনিংস ৩১২ রানে থেমে যায়। ৪৬.২ ওভার থেকে লংকানরা এ রান সংগ্রহ করে। ফলে, ৬৪ রানের জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
পুল ‘এ’র গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নামে ১৯৯৬’র বিশ্বকাপ জয়ী দল শ্রীলংকা। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। নির্ধারিত ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেট হারিয়ে তুলে ৩৭৬ রান।
আগে ব্যাটিং করতে নেমে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, শেন ওয়াটসন, স্টিভেন স্মিথ আর মাইকেল ক্লার্কের ব্যাটে ভর করে শ্রীলংকাকে ৩৭৭ রানের টার্গেট ছুড়ে দিয়েছে অজিরা। লংকান বোলারদের হেসে-খেলে উড়িয়ে দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের দেখা পান ম্যাক্সওয়েল।
দলীয় ৪১ রানে দুই উইকেটের পতনের পর ব্যাটিং ক্রিজে থেকে আরও ১৩৪ রান যোগ করেন তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা স্টিভেন স্মিথ এবং অজি দলপতি মাইকেল ক্লার্ক। তবে, ইনিংসের ৩২তম ওভারের পঞ্চম বলে মালিঙ্গা এ জুটি ভাঙেন।
৬৮ বলে ৬৮ রান করা ক্লার্ককে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান মালিঙ্গা। আউট হওয়ার আগে ক্লার্ক তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৭তম অর্ধশতক করেন।
আর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৭২ রানে বিদায় নেন স্টিভেন স্মিথ। দিলশানের বলে পেরেরার তালুবন্দি হওয়ার আগে স্মিথ ৮৮ বল মোকাবেলা করে ৭টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান।
স্টিভেন স্মিথ আর মাইকেল ক্লার্ক বড় জুটি গড়ে বিদায় নিলে ব্যাটিং ক্রিজের দায়িত্ব নেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং শেন ওয়াটসন। ক্রিজে থেকে লংকান বোলারদের শাসন করে আরেকটি বড় জুটি গড়েন ম্যাক্সওয়েল-ওয়াটসন। ১৬০ রানের জুটি গড়ে ম্যাক্সওয়েল ৫৩ বলে ১০২ রান করে আউট হন।
মাত্র ২৬ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়ে ম্যাক্সওয়েল ৫১ বলে তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক তুলে নেন। আর প্রথম শতক তুলে নিতে ম্যাক্সওয়েল ১০টি চারের পাশে ৪টি বিশাল ছক্কা হাঁকান।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩২তম অর্ধশতক করে শেন ওয়াটসন করেন ৬৭ রান। ওয়াটসনের ইনিংসে ছিল ৭টি
চারের পাশে ২টি ছক্কার মার।
অস্ট্রেলিয়ার ছুড়ে দেওয়া ৩৭৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামেন শ্রীলংকার দুই ওপেনার দিলশান এবং লাহিরু থিরিমান্নে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মিচেল জনসনের বলে উইকেটের পিছনে ব্রাড হাডিনের গ্লাভসবন্দি হন এক রান করা থিরিমান্নে।
এরপর ব্যাটিং ক্রিজে থেকে দলকে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিতে থাকেন দিলশান-সাঙ্গাকারা জুটি। ১৩০ রানের জুটি গড়ার পর ব্যক্তিগত ৬২ রান করে ফকনারের বলে এলবি’র ফাঁদে পড়েন দিলশান। আউট হওয়ার আগে ৬০ বলে তিনি ৮টি চার মারেন।
১৯ রানে বিদায় নেন মাহেলা জয়াবর্ধনে। দলীয় ১৮৮ রানে ৩১তম ওভারের শেষ বলে রান আউট হয়ে ফেরেন তিনি।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৪তম শতক হাঁকিয়ে দলকে ভালোভাবে টেনে নিয়ে যান কুমার সাঙ্গাকারা। তবে, ফকনারের করা ইনিংসের ৩৪তম ওভারের পঞ্চম বলে ফিঞ্চের তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেন চলতি বিশ্বকাপের আসরে টানা তিন ম্যাচে শতক হাঁকানো সাঙ্গাকারা। আউট হওয়ার আগে সাঙ্গাকারা ১০৭ বলে ১১টি চারের সাহায্যে করেন ১০৪ রান। দলীয় ২০১ রানের মাথায় তিনি বিদায় নেন।
কুমার সাঙ্গাকারা অসাধারণ একটি ইনিংস খেলে বিদায় নিলে ব্যাটিং ক্রিজের দায়িত্ব পান লংকান দলপতি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ এবং দিনেশ চান্দিমাল। এ দু’জন মিলে দলের রান দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। মাত্র ৪৪ বলে ৮০ রান তোলার পর রিটায়ার্ড হার্ট হন চান্দিমাল। তবে, তার আগে ২৪ বলে ৮টি চার আর একটি ছয়ে চান্দিমাল করেন ৫২ রান।
একই ওভারে উইকেটের পিছনে হাডিনের গ্লাভসবন্দি হন লংকান দলপতি। ওয়াটসনের বলে আউট হওয়ার আগে ম্যাথুজ ৩১ বলে দুটি চার আর একটি ছয়ে করেন ৩৫ রান।
দলীয় ২৮৩ রানে শ্রীলংকার পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে। টপঅর্ডারের ছয় ব্যাটসম্যান আর দিনেশ চান্দিমাল রিটায়ার্ড হার্ট হলে চাপের মধ্যে পড়ে লংকানরা। সেখান থেকে আর কেউ ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে ৩১২ রানে শেষ হয় লংকানদের ইনিংস।