হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার মিজানুর রহমান নিজাম নামে এক ব্যক্তি শক্তিশালী একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মানব পাচারের শিকার হয়েছেন। ইটালী পাঠানোর নামে তাকে গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিখোঁজ নিজামের স্ত্রী আয়েশা আক্তার। এ ব্যাপারে আয়েশা আক্তার হবিগঞ্জ মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নবীগঞ্জ উপজেলার পাঞ্জারাই গ্রামের হিলাল উদ্দিনের পুত্র লিবিয়া প্রবাসী সাহাব উদ্দিন, তার ভাই বাহার উদ্দিন, মৃত মজমদর আলীর পুত্র বাছিত মিয়া, সাহাব উদ্দিনের পিতা হিলাল মিয়া, তার চাচা জালাল উদ্দিন, জালাল উদ্দিনের পুত্র ফখরুল মিয়া, কামরুল মিয়ার বিরুদ্ধে মানব পাচারের মামলা দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। এজাহারে বাদিনী উল্লেখ করেন, আসামীরা সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী দলের সদস্য। পাঞ্জারাই গ্রামের হিলাল উদ্দিনের পুত্র সাহাব উদ্দিন দীর্ঘদিন যাবৎ লিবিয়া অবস্থান করে বাংলাদেশ থেকে লিবিয়িা হয়ে লোক পাঠায় ইটালী। আর এই মানবপাচারে তাকে সহযোগিতা করে তার ভাই বাহার উদ্দিন ও মজমদরন আলীর পুত্র বাছিত মিয়াসহ তার পরিবারের লোকজন। ২০১৬ সালের ২৫ আগষ্ট বিবাদিরা তার স্বামীকে লিবিয়া হয়ে ইটালী পাঠানোর জন্য ২ কিস্তিতে ৮ লাখ টাকার চুক্তি করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বাহার উদ্দিন ও বাছিত মিয়া তার বাড়িতে গিয়ে তার স্বামীর কাছন থেকে ১ম কিস্তির নগদ ৪ লাখ টাকা নেয়। টাকা পেয়ে ২৩ নভেম্বর দালালরা তার স্বামীকে লিবিয়া পাঠায়। তার স্বামী নিজাম লিবিয়া যাওয়ার পরেই মানবপাচারকারী দলের সদস্যরা তাদের কাছে আরো ৪ লাখ টাকা দাবী করে। টাকা না দিলে তারা তার স্বামী নিজামকে লিবিয়ায় বন্দী করে হুমকি দেয়। এভাবে কয়েকমাস অতিবাহিত হওয়ার পর গত ২৮ জুন লিবিয়া থেকে সাহাব উদ্দিন ফোনে টাকা অথবা টাকার বদলে তাদের বাড়ি মানবপাচারকারীদের নামে স্টাম্পে লিখে দেওয়ার জন্য বলে। অন্যথায় তার স্বামীকে খুন করার হুমকি দেয়। পরে উপায়ন্থর না দেখে বাধ্য হয়ে নজিামের পরিবার জমি বিক্রি করে গত ১০ জুলাই বাছিত মিয়াকে আরো ৪ লাখ টাকা দেয়। কিন্তু টাকা দেয়ার পরেও তার স্বামীর কোন খোঁজ খবর না পেয়ে তারা দালালদের বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে দালালরা বাড়ি ছেড়ে সিলেটসহ নানাস্থানে গা ঢাকা দিয়েছে। অনেক খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারে বিবাদীরা সিলেট শহরে অবস্থান করছে। পরে বাধ্য হয়ে লিবিয়ায় নিখোঁজ নিজামের স্ত্রী গত ৭ আগষ্ট হবিগঞ্জ মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে উল্লেখিতদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন তার স্বামীকে আসামীরা লিবিয়া নিয়ে জিম্মি করে রাখে। আসামীরা পরিকল্পিতভাবে তাদের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে লিবিয়ার অজানা স্থানে আটক করে রখেছে। তিনি তার স্বামীকে মানব পাচারকারীরা খুন করে ফেলেছে বলেও তিনি আশংকা করেন। তিনি লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে তার স্বামীকে বন্দীদশা থেকে উদ্ধার করার জন্য আবেদন করেন।