আড়ংয়ে ককটেল হামলা ও গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ ॥ মিরের ময়দানে পৃথক হামলায় দুই শিশু সহ আহত ৪

34

OIUUUUUস্টাফ রিপোর্টার :
লেট নগরীতে হঠাৎ করে ককটেল ও পেট্রোল বোমা, পুলিশের গাড়ীতে হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। হরতাল অবরোধ উপেক্ষা করে কিছু সংখ্যক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় দুর্বৃত্তরা এসব প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে ককটেল, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে বলে নগরবাসী মনে করছেন। এসব হামলায় আহত হয়েছেন শিশু, তরুণী, ড্রাইভারসহ বেশ কয়েকজন। গতকাল সোমবার দুপুরে নগরীর নয়াসড়ক এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও একমাত্র আড়ং খোলা থাকায় সেখানে ককটেল নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় সেখানে একটি মাক্রোবাস ভস্মীভূত হয় এবং এক তরুণী আহত হন। এছাড়া গতকাল সকাল থেকে নগরীর খাসদবির, মিরের ময়দান, সুবিদবাজার, দর্শনদেউরীসহ বিভিন্ন স্থানে গাড়ী ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নগরীর নয়াসড়কস্থ ফ্যাশন হাউস আড়ং লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে আড়ং এর সামনের গ্লাস ভেঙ্গে যায়। তবে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আড়ং কর্মকর্তা হাসনাত জানান, দুটি মোটর সাইকেলযোগে ৪জন যুবক আড়ং লক্ষ্য করে ককটেল ছুঁড়ে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সবাই। ককটেল হামলায় আড়ং-এর সামনের গ্লাস ভেঙে যায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। তবে তার আগেই নিরাপত্তা কর্মীরা আড়ং-এর মূল ফটক বন্ধ করে দেন। এ সময় তারা পার্কিং-এ রাখা একটি মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অতিরিক্ত) রহমত উল্লাহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সিলেট আড়ং-এ দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এবং একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে, নগরীর মীরের ময়দানে একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা লক্ষ্য করে ককটেল হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে দুইশিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার বেলা ১টা ৫ মিনিটের সময় এ ঘটনা ঘটে। আহতদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জের মাহবুবুর রহমান লায়েকের ছেলে নাসির (৮), হাফিজুর রহমান (১৮ মাস) ও সিএনজি অটোরিক্সা চালক। অটোরিক্ষা চালকের নাম জানা যায়নি। মাহবুবুর রহমান লায়েক জানান- কুলাউড়া যাওয়ার জন্য তিনি গোবিন্দগঞ্জ থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে রওয়ানা হন। সিলেট রেলওয়ে ষ্টেশন পর্যন্ত আসার জন্য তিনি একটি সিএনজি অটোরিক্সা ভাড়া করেন। অটোরিক্সাটি নগরীর মীরের ময়দানে আসার পর কয়েকজন যুবক ককটেল হামলা চালায়। ককটেল বিস্ফোরণে তার দুই শিশুসন্তান ও চালক গুরুতর আহত হন। তাদেরকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া হামলায় তিনি ও তার স্ত্রী হালকা আহত হয়েছেন বলে জানান মাহবুবুর রহমান লায়েক।
অপরদিকে, ২০ দলীয় জোটের হরতাল চলাকালে নগরীর মিরের ময়দানস্থ বাংলাদেশ বেতারের অদূরে ২টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া দর্শনদেউড়ি এলাকায়ও কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এছাড়া সুবিদবাজার পয়েন্টে ২টি যানবাহনের গ্লাস ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার বেলা ১২ টা থেকে ১টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ককটেল বিস্ফোরণের পর দর্শনদেউরী এবং মিরের ময়দান এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পথচারীদের এদিক ওদিক ছুটোছুটি করতে দেখা যায়। খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা ওই এলাকায় টহল দেন। এছাড়া দর্শনদেউরী এলাকায় অবস্থান করছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাত ৮ টায় নগরীর জিন্দাবাজার মেট্রোকালার ল্যাবের সামনে ককটেল বোমা  বিস্ফোরনে এক শ্রমিক আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকট শব্দে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় নগরীর কানিশাইল এলাকার কামাল নামে এক রাজমিস্ত্রি ডান পায়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখন হয়। খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। পরে আহত কামালকে ওসমানী হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে কোতোয়ালী থানা ওসি আসাদুজামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
নগরীর খাসদবীর এলাকার মদনী জামে মসজিদের সামনে ডিউটিরত পুলিশ সদস্যদের সামনে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, খাসদবীর মদনী জামে মসজিদের সামনে ডিউটিরত ছিলেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এ সময় তিনটি মোটর সাইকেলে কয়েকজন যুবক এসে তাদের সামনে তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে পুলিশ সদস্যরা তৎপর হওয়ার আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।