সিলেটের বাজারে আরেক দফা বেড়েছে আলু ও চালের দাম

7

স্টাফ রিপোর্টার
ঈদের আমেজ শেষ! বাজারে লোকে ভরা। কিন্তু বেচা-কেনা কম। আলুর দাম কমছে না। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন মোকামে দাম বেশি। আর কমবে না আলুর দাম। বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে। পেঁয়াজসহ অন্য জিনিসের দামও বেশি। চালের দামও বাড়তি। ৭০ টাকার মিনিকেট চাল ৭২ টাকা হয়ে গেছে। তবে পোলট্রি মুরগির দাম কমে ১৭৫-১৮০ টাকা কেজিতে নেমেছে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া যায়।
চড়া আলু ও পেঁয়াজের দাম : ঈদের পর আলুর দাম আরেক দফা কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল। পাইকারি ব্যবসায়ী সবুজ বলেন, যতই দিন যাচ্ছে কোনো সুখবর নেই আলুর বাজারে। ঈদের পর কমবে মনে হলেও বাজারের চিত্র উল্টো। মুন্সীগঞ্জের আলু বিক্রি হয় ৫২ টাকা। আর কমার লক্ষণ নেই। কারণ বর্ষাকালে অন্যান্য সবজির সরবরাহ কম হওয়ায় আলুর ওপর চাপ বাড়ে। এ জন্য দামও কিছুটা চড়া। পাইকারি ব্যবসায়ী মিরাজও বলেন, আলুর দাম বেশি। ৫৩-৫৫ টাকা কেজি। ঈদের পর আলুতে চাপ বেড়েছে। এই বাজারের খুচরা বিক্রেতা মোবারক বলেন, ঈদের পর লোকে ভরে গেছে বাজার। কিন্তু বাজার চড়া। এ জন্য বিক্রিও কমে গেছে। আগে বেশি বেচাকেনা হতো। দুপুর গড়িয়ে গেলেও ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়নি।
তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজও বেশি দামে কেনা। তাই ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যান্য বাজারের বিক্রেতারাও বলেন আলু, পেঁয়াজে আর স্বস্তি নেই। তবে ঈদের পর রসুনের দাম কমে ২২০-২৪০ টাকা কেজি ও আদা ৩০০-৩২০ টাকা কেজি হয়েছে। দেশে প্রচুর পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও ঈদুল আজহার আগে দাম বেড়ে যায়। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মোকামেই বেশি দাম। ঈদের পর আর কমেনি। এ জন্য বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ফরিদপুরের পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও পাবনারটা ১০০ টাকা কেজি। পাইকারি শ্যামবাজারেও পেঁয়াজের দাম বেশি বলে বিক্রেতারা জানান।
স্বস্তি নেই সবজিতে : ঈদের পরে সবজিতেও স্বস্তি নেই। বর্ষা মৌসুমে ফসলের খেত ডুবে যাওয়ায় অধিকাংশ সবজির দাম বেড়ে গেছে বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান। কাঁচা মরিচের দামও বাড়তি। বর্তমানে ২৫০ গ্রামের দাম ৬০ টাকা বা কেজি ২২০-২৪০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, বেগুন ৮০-১০০ টাকা, পটোল, ঝিঙে ও ধুন্দল ৩০-৪০ টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা, শসা ৮০-১০০ টাকা, লেবুর হালি ২০-৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৩০-৩৫ টাকা, লাউ ও চালকুমড়ার পিস ৬০-৭০ টাকা। কচুর লতির কেজি ৮০-১০০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, টমেটোর কেজি ১০০-১২০ টাকা। পুঁইশাকের আঁটি ২৫-৩০ টাকা, লালশাক, পাট ও কচুশাকের আঁটি ১৫-২০ টাকা।
বাড়তি চালের দাম : সারা দেশেই বোরো ধান উঠে গেছে। বিভিন্ন রাইসমিল ভরে গেছে ধানে। তার পরও মিনিকেট চালের দাম বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে মিনিকেট ৬৬-৭০ টাকা বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার তা ৭২ টাকায় উঠেছে।
এর মধ্যে মোজাম্মেল চালের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ২ টাকা বেড়েছে। ৭০ টাকার চাল ৭২ টাকা, আটাশ চাল ৫২-৫৫ টাকা ও মোটা চাল ৫০-৫২ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোলাওয়ের প্যাকেট চাল ১৫০-১৭০ টাকা ও বস্তার চাল ১২০-১৪০ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীরা বলেন, অন্যদের চেয়ে মোজাম্মেল-এর চাল বস্তায় ১০০ টাকা বা কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। এ জন্য আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
পোলট্রির কেজি ১৭৫ টাকা : ঈদের আগে ১৯০-২০০ টাকা কেজিতে পোলট্রি মুরগি বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার দাম কমে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে। আগের মতোই সোনালী মুরগি ৩১০-৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা কেজি বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান। কারওয়ান বাজারের সততা পোলট্রি হাউজের সবুজ বলেন, চাহিদা কম থাকায় পোলট্রির দাম কমেছে। ১৮০ টাকার মধ্যেই বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যান্য খুচরা বিক্রেতারাও জানান, ঈদের পর বাড়েনি কোনো মুরগির দাম। ঈদে বেশি করে গরু-ছাগল জবাই হওয়ার কারণে বাজারে মাংসের চাহিদা কম। এ জন্য দামও কিছুটা কমেছে।
বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, ৭৫০ টাকা গরুর মাংস ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি। কারওয়ান বাজার, কৃষিমার্কেট, টাউনহল বাজারে ডিমের দাম কিছুটা কম হলেও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে।