স্টাফ রিপোর্টার :
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে বাংলাদেশের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ সরকার উল্লেখ করে বলেছেন, বিগত ও বর্তমান সময়ে এ সরকারের আমলে বাংলাদেশে সামগ্রিকভাবে যে উন্নয়ন হয়েছে এর আগে সবমিলিয়েও এতো উন্নয়ন কেউ করতে পারেনি।
মন্ত্রী গতকাল শুক্রবার বিকেলে সিলেট নগরীর টিলাগড় পয়েন্টে মহানগরের ১৯, ২০ ও ২১ নং ওয়ার্ড যুবলীগের যৌথ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। এদেশের ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল। আমরা বিশ্ববাসীর কাছে উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি। উন্নয়ন অগ্রযাত্রার এই ধারা অব্যাহত থাকলে বিশেষ করে এই উপমহাদেশের মধ্যে বাংলাদেশের সমকক্ষ কেউ হবে না বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোন বৈষম্য না রেখে সমতার ভিত্তিতে সারাদেশে উন্নয়ন করে যাচ্ছে সরকার। ধনি-গরিব সকলের সম্পদ বেড়েছে। দেশে দরিদ্র ও অতিদরিদ্রতা সমানতালে হ্রাস পাচ্ছে। গরিবের সংখ্যা শতকার ৭০ থেকে বর্তমানে ২২ ভাগে নেমে এসেছে। আগামী ৪ বছরে তা ১২ ভাগে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে মানুষ বেড়েছে, জমি কমেছে। এক সময় খাদ্য ঘাটতি চরম পর্যায়ে ছিলো। কিন্তু বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা ও প্রয়োগের পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের অনবরত সহায়তায় এ ঘাটতি কমেছে। এখন প্রায় ৩ গুণ খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। আগে উৎপাদনের পরিমাণ ছিলো ১শ’ ১০ লাখ মেট্রিক টন যা বর্তমানে ৩শ’ ৮২ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। বিদ্যুতের উৎপাদন আগের চেয়ে অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের নামে নাশকতা, পেট্রোল বোমায় মানুষ পুড়িয়ে হত্যাকে সন্ত্রাসের ভাষা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এসব অপরাধের জন্য বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াই দায়ি। যত সব খারাপ দৃষ্টান্ত দেশ ও মানুষের জন্য অমঙ্গল, সেগুলো অনবরতই তিনি করে যাচ্ছেন। তার এসব আন্দোলনের কোন জনমত নেই। এমনকি দলের নেতারাও তার কাছে আছেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ করা যথাপোযুক্ত।
তিনি বলেন, এসব আন্দোলন দেশের মঙ্গল নয়, এটা দেশের শত্রুতা। এ থেকে অনতিবিলম্বে মুখ ফেরানোর জন্য বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। আবুল মাল মুহিত বলেন, নতুবা আমরা নিশ্চিতভাবে বলে যাবো- খালেদার আনুগত্য এই দেশ ও মানুষের প্রতি নয়। এই সব হত্যার জন্য সে-ই দায়ি থাকবে।
তিনি দেশ বিরোধি সকল অপকর্ম, অপতৎপরতা ও অপশক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক যুবলীগ নেতা জামেল আহমদের সভাপতিত্বে এবং মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিক জায়গীরদার ও সেলিম আহমদ সেলিমের যৌথ পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আহমদ আল কবীর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক, মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক, অধ্যাপক জাকির হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহমান জামিল, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আলম খান মুক্তি, যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক, এডভোকেট ফখরুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আফসর আহমদ, ১৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন রাজা, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ সিরাজ, ২০ নং ওয়ার্ড সভাপতি মো. সানাউর মিয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমদ, ২১ নং ওয়ার্ড সভাপতি ইসমাঈল মাহমুদ সুজন, সেক্রেটারি আব্দুল মালিক চৌধুরী, মহানগর যুবলীগের সদস্য মাসুম বিল্লাহ চৌধুরী, ডা. মোহাম্মদ হোসেন রবিন, জাহাঙ্গীর আলম, সৈয়দ গোলজার হোসেন, শামসুল ইসলাম মিলন, আব্দুল লতিফ রিপন, ফয়সল আজাদ চৌধুরী, সুবেদুর রহমান মুন্না, দেবাংশু দাস মিটু, সাজু ইবনে হান্নান খান, রাহেল আহমদ চৌধুরী, শান্ত দেব, মিয়া মো. লিটন, ইমামুর রহমান লিটন, আনিসুর রহমান তিতাস, লাহিন আহমদ, হোসেন বাবু, এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন, ইকবাল হোসেন, হুমায়ুন রশিদ লাভলু, হিরন মাহমুদ লিপু, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরী, আবিদুর রহমান শিপুল প্রমুখ।
দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থিত যুবলীগ নেতাকর্মীদের প্রস্তাব ও সমর্থনের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে ১৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রব সায়েম ও সাধারণ সম্পাদক রুমেল আহমদ, ২০ নং ওয়ার্ডের হোসেন আহমদ চৌধুরী শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক এস আর শাওন, ২১ নং ওয়ার্ড সভাপতি আমিনুল ইসলাম সুহেল ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান পাপলুকে মনোনীত করা হয়। এসময় সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগ, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় যুবলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।