সিলেটে এক সপ্তাহ ধরে পাথর আমদানি বন্ধ

6

কে.এম লিমন গোয়াইনঘাট থেকে

পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে শুল্ক কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে তামাবিল স্থলবন্দরসহ সিলেট বিভাগের সবকটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে টানা ৫দিন ধরে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে সরকার হারাচ্ছে প্রতিদিন প্রায় আড়াই কোটি টাকার রাজস্ব। আর কর্মহীন হয়ে পড়েছেন পাথর শ্রমিকরা। গত সোমবার দুপুর ১২টায় এক মতবিনিময় সভা থেকে ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। তামাবিল স্থল বন্দর বন্ধ থাকায় কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। শনিবার সকালে স্থলবন্দর খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তামাবিল স্থল বন্দর শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আয়োজনে মানববন্ধনটি শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এসময় শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, সহ-সভাপতি আয়নাল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন চলাকালে সড়ক অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা। এতে যানবাহন আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। পরে তামাবিল পাথর, চুনাপাথর ও কয়লা আমদানীকারক গ্রæপের নেতৃবৃন্দের আশ্বাসে শ্রমিকরা দুই দিনের জন্য আন্দোলন থেকে সড়ে দাঁড়ান।
জানা যায়, তামাবিল স্থলবন্দরে অবস্থিত বাংলাদেশ শুল্ক বিভাগ পণ্য আমদানিতে প্রতি টনে পূর্বের নির্ধারিত অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ১১.৭৫ ডলারের পরিবর্তে ১৩ ডলার নির্ধারণ করেছে। বাড়তি শুল্ককর প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার থেকে উভয় দেশে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেন পাথর আমদানিকারকরা।
আমদানিকারকরা জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি টনে ১৩ ডলার অ্যাসেসমেন্ট রেট নির্ধারণ করায় ব্যবসায়ীদের পূর্বের তুলনায় বেশি রাজস্ব দিতে হবে। এই হারে রাজস্ব বাড়ার কারণে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুণতে হবে। ফলে ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক হার প্রত্যাহারে দাবিতে পণ্য আমদানি বন্ধ রেখেছেন। শুল্ক কর না কমানো পর্যন্ত তারা পাথর আমদানি করবেন না বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। শুল্ক বিভাগের তথ্যমতে, সিলেট অঞ্চলের দুটি স্থল বন্দর ও ৫টি শুল্ক স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার টন পাথর ও চুনাপাথর আমদানি হয়। গড়ে রাজস্ব আদায় হয় প্রায় আড়াই কোটি টাকা। আমদানি বন্ধ থাকায় এ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
এ বিষয়ে তামাবিল চুনা পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রæপের সভাপতি লিয়াকত আলী জানান, এনবিআর ভারত থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানির উপর অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু প্রতি মেট্রিক টনে বৃদ্ধি করে। এই বাড়তি শুল্ক দিয়ে পণ্য আমদানি করতে হলে আমদানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই তামাবিলসহ সিলেট বিভাগের সবকটি বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনপাথর পাথর আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এনবিআর সিলেট অঞ্চলের স্থলবন্দরগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা বোল্ডার স্টোন, স্টোন চিপস এবং লাইমস্টোন পাথরের উপর অতিরিক্ত শুল্কায়ন মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেটের কমিশনার গত ৪ জানুয়ারি এক পত্রে ৮ জানুয়ারি থেকে শুল্কায়ন মূল্য কার্যকর হওয়ার কথা জানানো হয়। এরপর পাথর আমদানি বন্ধ করে দেন আমদানি কারকরা।