স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অবস্থান এখনো খোলাসা নয় নগরবাসীর কাছে। আত্মগোপনে থেকে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করলেও তিনি কোথায় আছেন তা জানেন না নগরবাসী। তবে মেয়র আরিফের কুমারপাড়াস্থ বাসা এখন রয়েছে গোয়েন্দা নজরদারিতে। কিন্তু কুমারপাড়ার বাসায় মেয়র আরিফ অবস্থান করছেন না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, আত্মগোপনে থেকে মেয়র আরিফ হবিগঞ্জ আদালতে আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন। কাল রবিবার বা এর পরদিন সোমবার তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলায় হবিগঞ্জ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে পারেন বলে তার ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।
গত ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জের একটি আদালতে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি সিলেট জোনের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুল। এরপর থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনে সরাসরি অংশ গ্রহণ থেকে বিরত রয়েছেন মেয়র।
তবে গত বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্ম দিবস পর্যন্ত তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি।
পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে, আদালতের নির্দেশনা তারা পেয়েছেন। এখন উপর থেকে সিগন্যাল পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আরিফের অবস্থান জানতে কাজ শুরু করেছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের একজন সদস্য কুমারপাড়াস্থ মেয়র আরিফের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। দিনের বেশিরভাগ সময়ই তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনেরও আনাগোনা বেড়েছে কুমারপাড়া এলাকায়।
মেয়র আরিফের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, মূলত গ্রেফতার এড়িয়ে চলছেন মেয়র। আদালতে আত্মসমর্পণের জন্য নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন তিনি। কাল রবিবার আত্মসমর্পণের পক্ষে তিনি। ঐ দিনই হবিগঞ্জের সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণের সম্ভাবনা রয়েছে তার। অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী দলীয় হাই কমান্ডের সাথেও যোগাযোগ রেখেছেন। তাদের কাছে থেকেও আত্মসমর্পণের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন। আত্মসমর্পণের পর আইনি বিষয়টি পরিচালনার দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ গণমাধ্যমকে জানান, ‘আদালত আরিফের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ দিয়েছে তা আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি। তবে তাকে গ্রেফতার সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র এখনো আমাদের কাছে আসেনি। আসামাত্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
উল্লেখ্য, গত রবিবার হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রশীদ আহমদ মিলনের আদালতে কিবরিয়া হত্যা মামলার ৩য় দফা সম্পূরক চার্জশিট গৃহীত হয়। এ সময় সিলেট ও হবিগঞ্জের মেয়রসহ মামলার পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়া হয়।