এস এম রাজু জৈন্তাপুর থেকে :
জৈন্তাপুর উপজেলার কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে কি? ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে নিরাশ হয়নি প্রান্তিক কৃষকরা। নিজের জমিসহ অন্যের জমি ধার নিয়ে শাক-সবজী চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে দিনরাত শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিকট থেকে পায়নি কোন সাহায্য সহয়তা। বিভিন্ন সংক্রামক রোগ বালাইয়ের পরামর্শ। গত ২৭ নভেম্বর কৃষি ও প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইমরান আহমদের সম্মুখে বিশেষ অতিথির বক্তেব্যে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন। এবারের কৃষি ও প্রযুক্তি মেলার বাংরাদেশ কৃষি ব্যাংক জৈন্তাপুর শাখা থেকে তাদের হিসাব নং থেকে মেলার জন্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করলেও নাম মাত্র মেলা আয়োজন করায় কৃষকের মেলার প্রতি কোন আগ্রহ ছিল না।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, নিজপাট ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের দরিদ্র প্রান্তিক কৃষক পতিত জমিতে গড়ে তুলেছেন শাক-সবজীর বাগান। আর এর সিংহ ভাগ চাষ হয়ে তাকে জৈন্তাপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে। জৈন্তাপুর ইউনিয়নের মোয়াখাই গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে ইসাক আহমদ ও তার ছোট ভাই অন্যার জমি বর্গা নিয়ে প্রায় ১ হেক্টর ভূমির উপর ২মাস থেকে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে মুলা, আলু, শশা ও ২০০টি গর্তের মধ্যে লাউয়ের চারা রোপণ করেন। তার এই বাগান করতে বীজ, সার, কীট নাশক সেচ সহ প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। মুক্তাপুর গ্রমের নুরুল ইসলামের ছেলে আবুল হাসেম তার নিজ জমিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ১ একর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজী চাষ করেছেন নিজ উদ্যোগে এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা ইতি মধ্যে তিনি লালশাক ও লাইশাক বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছেন, লামনীগ্রাম (উত্তর) এলাকার মুফিজ আলী মাদু খুবের সাথে বলেন আমরা সারা বছরই নানা ধরনের শাক-সবজি চাষ করে থাকি কিন্তু কৃষি অফিসের লোকজন তাদের অনুগত লোকদের সরকারী সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। নিজপাট ইউনিয়নে কৃষক ফরিদ মিয়া তার বন্ধুর পরিত্যক্ত ভূমিতে লাউ চাষের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক প্রান্তি কৃষক ফরিদ মিয়া লাউয়ের বাগান তৈরী করে। কঠোর শ্রম ও পরিচর্যার মাধ্যমে তার বাগান হতে তিনি প্রায় ৫ হাজার টাকা মূল্যের লাউ বিক্রয়ও করেছেন। এ ব্যাপারে কথা হয় আরো বেশ অনেক জন প্রান্তিক কৃষকের সাথে, কৃষকরা জানান, বর্তমানে যে পরিমান ফলন দেখা যাচ্ছে তা সঠিক ভাবে উত্তোলন করতে পারবো কি না তা নিয়ে তাদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়িছে। সংশয় প্রকাশ করার কারণ জানতে চাইলে প্রান্তিক কৃষক ইসাক আহমদ জানান, সরকার চাষীদের মধ্যে বিনা মূল্যে সার ও বীজ দিয়েছে। তবে বীজ পায়নি প্রকৃত চাষীরা, এর সুবিধা পেতে মোটা অংকের টাকা দিয়ে তাদের সদস্য হতে হয়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ থেকে সার ও বীজ দেয়া হয়েছে তাদের অনেকেই কৃষক নয়, এ জন্য আর্থিক অনটনের জন্য লক্ষ্যে পৌঁছানো অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। কৃষক ফরিদ মিয়া জানান- এ বিষয়ে তার ভালো অভিজ্ঞতা নেই দেশীয় পদ্ধতিতে লাউ বাগানটি করেছেন, লাউ গাছের গোরা পচন রোগ সহ বিভিন্ন প্রকারের রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। সাধ্যমত নিজের মত করে কীটনাশক বিক্রেতার পরামর্শ অনুযায়ী বাগানটি পরিচর্যা করছি। রোগের আক্রমণ ছাড়া সঠিক ভাবে তার বাগানের ফলন তুলতে পারলে হয়তবা ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারবে। তিনি জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের লোকজন দেখেছে কিন্তু আমাকে এ বিষয়ে কোন ধরনের সাহায্যও সহযোগিতা, কিংবা রোগ সংক্রামণের প্রতিকার সম্পর্কে কোন পরামর্শ দেয়নি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যাদেরকে সার, বীজ, কীটনাশক দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে তাদের ২/১জন ছাড়া অনেকেই কৃষি বাগান করেনি।