সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন সাহেবের বাজারে এক আইনজীবীর দাপটে অসহায় একটি পরিবার

2

স্টাফ রিপোর্টার

স্বামীকে হত্যার বিচার এখনও মিলেনি। ৫ আগস্ট আইনশৃংখলার অবনতির সুযোগে প্রতিপক্ষ দখল করে নিয়েছে দোকানপাট। সেই দোকান সেনাবাহিনীর সহায়তায় উদ্ধার হলেও এখন মিথ্যা-বানোয়াট অভিযোগে মামলার শিকার পরিবারটি।
এমন ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিমানবন্দর এলাকার সাহেবের বাজারে। সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন সাহেবের বাজার এলাকার বাজারতল গ্রামের মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে মৃত নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী মোছা. রুনি বেগম।
তিনি জানান, ৫ আগস্ট দখল হওয়া দোকানপাট গত ৪ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ফিরে পেয়েছিল তার পরিবার। অথচ এ ঘটনাকে হামলা ও জবরদখল দেখিয়ে আদালতে মামলা করেছে প্রতিপক্ষ। এর পেছনে এলাকার দেবাইরবহর গ্রামের মো. মোস্তফা মিয়ার ছেলে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সিলেট জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘খোরশেদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি ভ‚মিখেকো ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে দুই বছর আগে আমার স্বামী হত্যার শিকার হয়েছেন। তারা এখনও আমাদের পরিবারকে হয়রানি ও নির্যাতন করছে। মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে।’
রুনি বেগম জানান, তার স্বামী বশির উদ্দিন একজন পল্লিচিকিৎসক ছিলেন। সাহেবের বাজারে স্বামী-ভাসুরদের জায়গা ও একটি টিনশেড মার্কেট রয়েছে। মার্কেটের দোকানকোটায় রয়েছে ফার্মেসি। পার্শ্ববর্তী ঘুড়ামারা হাওরে তাদের প্রায় ৭ বিঘা জমি রয়েছে। এসব ভ‚-সম্পত্তিতে কুদৃষ্টি পড়েছে খোরশেদ আলমের।
তিনি অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের সুবাদে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে খোরশেদ গং আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। দুই বছর আগে খোরশেদ গংদের হামলায় নিজের স্বামী পল্লী চিকিৎসক বশির উদ্দিনকে হত্যা করা হয় অভিযোগ রুনি বেগম বলেন, ‘খোরশেদ আলম বাজারতল গ্রামের মৃত সোনাফর আলীর ছেলে নয়ন মিয়া (৩২) ও তার ভাই-ভাতিজাসহ বেশ কয়েকজনকে নিয়ে একটি ভ‚মিখেকো ও সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। ২০২২ সালের শুরুর দিকে আমার স্বামী-ভাসুরদের সাহেবের বাজারস্থ মার্কেট ও ঘুড়ামারা হাওরের জমি জবরদখলের পায়তারা শুরু করেন। এ নিয়ে বিরোধের এক পর্যায়ে ওই বছরের ৯ এপ্রিল সকালে খোরশেদের নির্দেশে নয়ন এবং তার সহযোগীরা হামলা করে আমার স্বামী নিজাম উদ্দিনকে বেধড়ক মারপিট করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় আমার ভাসুর পল্লিচিকিৎসক আকরাম উদ্দিন বাদী হয়ে সিলেট এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় নয়নকে ১ নং ও খোরশেদকে ৫ নং আসামি করি আমরা। কিন্তু পরবর্তীতে বেশিরভাগ আসামি জেল খেটে জামিনে বের হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন এবং নানা হয়রানি শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন সব জায়গায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটলে এই সুযোগে ওই দিন রাতে অ্যাডভোকেট খোরশেদের নির্দেশে ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে হামলা করে আমাদের মার্কেট দখল করে নেয় নয়ন। আমার ভাসুরের ফার্মেসিতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। পুরো মার্কেট দখল করে নিয়ে আমার ভাসুরের ফার্মেসির কক্ষের সব ফেলে দিয়ে সেখানে চায়ের দোকান বসায়।’ এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি পুলিশি কার্যক্রম শিথিল থাকায় সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হন বলে জানান তিনি। রুনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে সবধরনের কাগজপত্র দেখানোর পর গত ৪ সেপ্টেম্বর তাদের একটি টিম সাহেবের বাজারে গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে বাজার কমিটির নেতাদের উপস্থিতিতে মার্কেটের দখল সমঝে দেয়। কিন্তু চতুর খোরশেদ ১২ সেপ্টেম্বর সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালত (আমলি আদালত-৬)-এ একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করিয়েছেন। অথচ পুরো সাহেব বাজার এলাকার মানুষ স্বাক্ষী ৪ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনী আমাদের হাতে মার্কেটের দখল তুলে দিয়েছে।’ তিনি এই বিষয়ে ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সিলেট বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সুদৃষ্টি কামনা করেন।