রাজনগর উপজেলার ৪০টি গ্রাম এখনো নিমজ্জিত

7

কাজির বাজার ডেস্ক

বৃষ্টি ও ভারতের ঢলে মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদে পানি কমলেও হাকালুকি হাওরবেষ্টিত জুড়ী নদে এখনো বিপৎসীমার ১৪৩ সে.মি. উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার সদর ও রাজনগর উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া একমাত্র নদী কুশিয়ারায় এখনো ধীর গতিতে পানি কমছে।
সোমবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া নিয়মিত বুলেটিন থেকে আরও জানা যায়, কুশিয়ারায় বিপৎসীমার ২৭ সে.মি. নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও ঘরবাড়ি এখনো তলিয়ে রয়েছে।
এদিকে সোমবার কুশিয়ারা নদী পাড়ের রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেপুর ইউনিয়নে গেলে দেখা যায়, নদী পাড়ের বকশিপুর, ছিক্কাগাঁও, কামালপুর, আমনপুর, সুরিখাল, যুগিকোনা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, উমরপুর, কান্দিগাও, জোড়াপুর, রামপুর ও ফতেপুর ইউনিয়নের সাদাপুর, হামিদপুর, বেড়কুড়ি, শাহাপুর, জাহিদপুর, আব্দুল্লাহপুর, ইসলামপুর ও সদর উপজেলার মনুমুখ ও খলিলপুর ইউনিয়নের ব্রাম্মণগ্রাম, হামরাকনো, নতুন বস্তি ও দাউদপুর এলাকাসহ নদী পাড়ের চার ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রাম এখনো প্লাবিত রয়েছে।
নদী পাড়ের জলমগ্ন এলাকার বন্যাক্রান্তদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কুশিয়ারা নদী থেকে পানি কমতেই চাচ্ছে না। প্রতিদিন এক থেকে দুই সে.মি. পানি কমছে। তারা জানান, এখনো নদীপাড়ের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষের ঘর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রাস্থা-ঘাট ও উঠানের ৯৫ শতাংশ জায়গা তলিয়ে রয়েছে।
ভুক্তভোগিরা কান্নাবিজড়িত কন্ঠে বলেন, মুষ্টিময় ত্রাণ পেয়ে তাদের আহার মিটবে না। তারা চান বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধান। এদিকে মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সোমবার জানায়, জেলায় ৫ হাজার ১শ ৬২ হেক্টর রূপা আউস জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ৩০ হেক্টর বীজতলা তলিয়ে গেছে। সবজির আরো ১ হাজার ৫৪ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। রূপা আউস ক্ষেতের ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর’র উপ-পরিচালক মো. সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, রূপা আউস ছাড়াও আগামীতে ১ লাখ ১ হাজার হেক্টর রুপা আমন আবাদ হবে। বন্যার এই পরিস্থিতি থাকলে রূপা আমনও চাষাবাদ ব্যাহত হবে। মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, জেলা জুড়ে ১ হাজার ৫০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৮টি বন্যাক্রান্ত হওয়াতে এখনো বন্ধ রয়েছে। ৬৯টি প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় কেন্দ্র চালু রয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, জেলায় ২১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্কুল-কলেজ মিলে ৩৪টি ও মাদ্রাসা মিলে আরও ১৩টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।