সবজি বাজারে আগুন

26

স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটে ১০০ টাকায়ও স্থির থাকছে না পেঁয়াজ ও সবজির দাম। একাধিক পণ্য ডাবল সেঞ্চুরি ছুঁইছুঁই। তাকানো যাচ্ছে না কাঁচা মরিচের দিকেও। পেঁয়াজ ও সবজির দাম শুনেই অনেকে বোকা বনে যাচ্ছেন। সিলেটের পাইকারি বাজারে ২৮০ টাকার নিচে মিলছে না কাঁচা মরিচ। গত সপ্তাহে যা ছিল আড়াইশ এর ঘরে। বাজারে দেশি টমেটো নেই বললেই চলে। ঊর্ধ্বমুখী আমদানিকৃত পণ্যের দর।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটের পাইকারী বাজারে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। খুচরা বাজারে যা আরো বেশি। হঠাৎ পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তের মানুষজন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় হঠাৎ করে আবারও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
নগরীর বন্দরবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ৮৫-৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০৫ টাকা। আর খুচরা বাজারে ও পাড়া-মহল্লার মুদির দোকানে বিক্রি হচ্ছে আরও বেশি দামে। আর এতে পেঁয়াজের এমন দাম বাড়ার কারণে অস্বস্তি প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সবকিছুর দাম বাড়ছে। কোনো কিছুতে নিয়ন্ত্রণ নেই। শুধু পেঁয়াজ নয়, চাল-ডাল, তেল-চিনি সবকিছুর দাম বেশী। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চারদিন আগেও পেঁয়াজের কেজি ৯০ টাকা কিনেছি। এখন পাইকারি বাজারেই ১০০ টাকার নিচে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। মহল্লার ব্যবসায়ীরা ১৫০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।
নগরীর শিবগঞ্জ এলাকার সোহেল মিয়া বলেন, এক সপ্তাহ আগেও ৯০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনেছি। অথচ এখন কিনছি ১০০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা দাম বেড়েছে।
নগরীর কালিঘাটের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাস বলেন, এক সপ্তাহ আগে আমরা পাইকারিভাবে ৮৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতাম, কিছুদিন আগে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন পাইকারিতে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আরো বেশি বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে নগরীর খুচরা বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীরা বলেন, চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের সরবরাহ অনেক কম। বাজারে এখন শুধু দেশি পেঁয়াজ। এলসি পেঁয়াজের সরবরাহ বন্ধ থাকায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
নগরীর সবজি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, এক কেজি গাজর কিনতে লাগছে দেড়শ টাকা। সবচেয়ে কমে ৫০ টাকায় মিলছে পেঁপে, পটল ও ঢেঁড়স। কাঁকরোল, করলা, শসা, বেগুনসহ বেশ কয়েকটি সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মুকি ও ঝিঙা কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে এখন ১৯০ টাকায়। এমনকি আলুর দামও ১৫ টাকা বেড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায়, টমেটো ১৮০-২০০ টাকা, করলা ১১০-১২০, বেগুন ও কাঁকরোল ৯০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। শসা বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। ঝিঙ্গা ৮০-৯০, চিচিঙ্গা ৭০-৮০, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা, পটল ৬০-৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া সাইজ ৫০ টাকা, পেঁপে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের লেবু হালিতে ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যবসায়ীদের যুক্তি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবজির সরবরাহ কম। তাই দাম বেশি।
নগরীর সোবহানীঘাট পাইকারি সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, তুলনামূলকভাকে সবজির সরবরাহ খুবই কম।
এ ব্যাপারে নিম্নবৃত্ত আয়ের কয়েকজনের সাথে আলাপ হলে তারা বলেন, পরিশ্রমের কাজ করে যা আয় করা হয় তা দিয়ে সংসার চলে না, নিত্যপণ্যর বাজারে সবকিছুই ঊর্ধ্বমুখী। এবার সবজির দামও বেড়ে গেছে। নতুন করে চিন্তার কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে যা ডাল আনতে পান্তা পুরায়।
এদিকে মধ্যবিত্তরা পড়েছেন বিপাকে যা আয় হয়, তা দিয়ে সীমিত এই আয় দিয়ে চলতে হয়, কারোর কাছে কষ্টের কথাও বলা যায় না।