সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নারীর দাবি : কাউন্সিলর আজাদের বাসায় হামলার ঘটনা পরিকল্পিত ও সাজানো

15

কোরবানির হাটের পাওনা টাকা চাওয়ায় আমার স্বামীর বাসায় হামলা হয়েছে।
সিসি ক্যামেরা দেখে ঘটনা তদন্তের আহবান

স্টাফ রিপোর্টার

সিলেট নগরের টিলাগড়ে ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের বাসায় হামলার ঘটনাকে পরিকল্পিত ও সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন স্থানীয় এক নারী। এর আগে কোরবানির পশুর হাটের পাওনা টাকা চাওয়ায় কাউন্সিলরের লোকজন হামলা করে শিশুসহ কয়েকজনকে আহত করে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে কাউন্সিলরের বাসার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ যাচাইয়ের দাবি জানান তিনি।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি করেন টিলাগড়ের কল্যাণপুর এলাকার শেখ নাঈমুর রহমান রাব্বির স্ত্রী শেখ তাহমিনা রহমান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘টিলাগড় গরুর বাজারের শ্রমিক হিসেবে আমার স্বামী শেখ নাঈমুর রহমান রাব্বি এবং স্থানীয় সামাদ, নাসির, রিয়াজ, বুরহান, রুবেলসহ আরও অনেকে কাজ করেছেন। কিন্তু বাজারের মূল ব্যক্তি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ এসব শ্রমিককে পারিশ্রমিক দেননি। টাকা না দিয়ে উল্টো টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হন।’
শেখ তাহমিনা অভিযোগ করেন, ‘এর জের ধরে গত ২৭ জুন কাউন্সিলরের ভাতিজা চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাদিকুর রহমান আজলার নেতৃত্বে আমাদের বাসাসহ অন্তত তিন জন শ্রমিকের বাসায় অতর্কিত হামলা, ভাংচুর, স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র লুট করে। এমনকি আমার কোলের শিশুকে জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে মাটিতে ছুঁড়ে মারে।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘রাত প্রায় দুইটার দিকে হঠাৎ করে আজলা, অনিল, আজিজুর, নাঈম, জুনেদ, আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের বাসায় হামলা চালায়। তারা বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ভাংচুর চালায়। আমি বাঁধা দিলে আমার কোল থেকে আমার দুই বছরের নিউমিয়া আক্রান্ত শিশুকে কোল থেকে কেড়ে নিয়ে মাটিতে ছুঁড়ে মারে। অস্ত্র ঠেকিয়ে আমার দুই হাতে থাকা স্বর্ণের বালা, গলার চিকন চেইন ও কানের দুটি দুলসহ দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং সম্ভ্রমহানির চেষ্টা চালায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘চিৎকার শুনে পাশের বাসার একজন চাচা এগিয়ে এলে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে পরদিন প্রাণভয়ে আমরা সুনামগঞ্জে বাবার বাড়িতে চলে যাই। সেখানেও তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে নিরুপায় হয়ে আবারও সিলেট শহরে এসে গোপনে এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেই।’
একই রাতে সন্ত্রাসীরা গরুর বাজারের বকেয়া টাকা চাওয়া শ্রমিক সামাদের শাপলাবাগের বাসায় ও নাসিরের বাসায় একইভাবে অতর্কিত হামলা ও ভাংচুর করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
এসব ঘটনা ধামাচাপা দিতে নিজেদের মধ্যে টাকা ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঝামেলা শ্রমিকদের ওপর চাপাতে কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ পরিকল্পিতভাবে নাটক মঞ্চস্থ করেছেন বলে দাবি করেন শেখ তাহমিনা রহমান।
তিনি বলেন, ‘কাউন্সিলর আজাদ ও তার সহযোগী শমসের আলী সারো পশুর হাটের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ঝামেলায় লিপ্ত হন। এর জের ধরে শমসের আলী সারোর বাসায় তাদের নিজেদের লোকজনই হামলা করে। কিন্তু বিয়ষটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নিরীহ শ্রমিকদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা চলছে।’ ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তিনি কাউন্সিলর আজাদের বাসার সিসি ফুটেজ যাচাইয়ের দাবি জানান। বলেন, ‘যদি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের বাসার সিসিটিভির ফুটেজ দেখা হয় তাহলে বিষয়টি দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে। সিসিটিভির রেকর্ড কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। তাই, সিসিটিভি টিভি ফুটেজ যাচাইয়ের জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
শেখ তাহমিনা রহমান ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন।