সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি বলেছেন- বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে নকল পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় যেমন অপরাধ, তেমনি নকল পণ্য ক্রয় ও তা ব্যবহার করাও অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে নকল পণ্য ক্রয় ও তা ব্যবহার করাকে অপরাধ মনে করা হয় না। যার ফলে কমমূল্যে বিভিন্ন নামী-দামী ব্রান্ডের নকল পণ্যে বাজার সয়লাব হয়ে আছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ ও সমাজের দায়িত্ববান ব্যক্তিদের যার যার অবস্থান থেকে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে শক্তিশালী ভ‚মিকা রাখতে হবে।
দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র উদ্যোগে রবিবার চেম্বার কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত নকল পণ্য প্রতিরোধ ও বর্জনে করণীয় শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, আমাদের এ দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে হলে জনসাধারণের চিন্তা-ভাবনার মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। দেশের প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে দেশপ্রেম বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশেই নকল পণ্য উৎপাদিত হয়, কিন্তু তা সাধারণত নামী-দামী ব্রান্ডের পোষাক, ঘড়ি ও বিভিন্ন বিলাসী পণ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু বাংলাদেশে খাদ্যদ্রব্য, ঔষধ, বেবী ফুড, ত্বকে ব্যবহার্য্য কসমেটিক্স ইত্যাদিও নকল হচ্ছে। যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। তিনি নকল পণ্য প্রতিরোধ এবং এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের উদ্যোগে সকল স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজন করবেন বলে জানান।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ ফখরুল ইসলাম ও বৃটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো’র কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স এর ডিরেক্টর সাবাব আহমেদ চৌধুরী। তারা সিলেট চেম্বারের উদ্যোগে নকল পণ্য প্রতিরোধ ও বর্জনে করণীয় শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজনের জন্য চেম্বার নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ এমদাদ হোসেন। সেমিনারের বিষয়বস্তুর উপর সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জনাব মোঃ আমিরুল ইসলাম মাসুদ।
সভায় বক্তাগণ সীমান্ত হাটগুলো দিয়ে নকল পণ্য আমদানি প্রতিহতকরণ, নকল পণ্য সনাক্তকরণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, বিভিন্ন পণ্যের সুরক্ষা কোড, বারকোড এবং কিউআর কোডের মাধ্যমে পণ্যের সঠিকতা যাচাই করে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়, জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ধারাবাহিকভাবে কর্মশালা আয়োজন এবং নকল পণ্য প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারীকে সংস্থাগুলোকে কঠোর ভ‚মিকা গ্রহণের আহবান জানান।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি এহতেশামুল হক চৌধুরী, কাস্টম্স এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেট এর যুগ্ম কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহী মোঃ ফয়সাল, লিডিং ইউনিভার্সিটির ফেকাল্টি অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের ডীন অধ্যাপক ড. বশির আহমেদ ভ‚ঁইয়া, নর্থ ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম আল আজিজ লেলিন, সিলেট উইমেন্স চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, ফুলকলির ডিজিএম মোঃ জসিম উদ্দীন খন্দকার, ক্যাব-সিলেট এর সভাপতি জামিল চৌধুরী এবং ক্যাটারার্স গ্রæপ অব সিলেট এর সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন চৌধুরী। সভায় উপস্থিত ছিলেন এসএমপি’র ডেপুটি কমিশনার (সিটিএসবি) ইমাম মোঃ শাদিদ, সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ স¤্রাট তালুকদার, সিলেট চেম্বারের পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টু, আলীমুল এহছান চৌধুরী, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, মোঃ আব্দুস সামাদ, ফাহিম আহমদ চৌধুরী, দেবাংশু দাস, মোঃ সারোয়ার হোসেন ছেদু, শান্ত দেব, আরিফ হোসেন, মোঃ মাহবুবুল হাফিজ চৌধুরী মুশফিক, বিসিক সিলেট এর ডিজিএম ম. সুহেল হাওলাদার, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ পারভেজ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া সুলতানা, র্যাব-৯ এর উপ-সহকারী পরিচালক প্রিয়দর্শী চাকমা, সিলেট চেম্বারের সচিব মোঃ গোলাম আক্তার ফারুক, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসিনা বেগম, বিএটি বাংলাদেশ এর হেড অব কমার্শিয়াল কমপ্লায়েন্স আব্দুল মুকাদ্দিম, কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান, নূর ইয়াশ শাম্স এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও সিলেট চেম্বারের সদস্যবৃন্দ। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মিনতি দেবী। বিজ্ঞপ্তি