বন্যার শঙ্কায় গোয়াইনঘাটের নিম্নাঞ্চলের মানুষ

1

কে.এম লিমন গোয়াইনঘাট

ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তৃতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়ার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে গোয়াইনঘাটের নিম্নাঞ্চলের মানুষ। দফায় দফায় বন্যার কবলে পড়ে উপজেলাবাসীর মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত তিন দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে গোয়াইনঘাট উপজেলার সব নদ-নদীর পানি দ্রæত বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলায় তৃতীয় দফায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৮ জুন সকাল সাড়ে আটটা থেকে সোমবার ১ জুলাই সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত তিন দিনে মোট ৬৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও ১ জুলাই সকাল সাড়ে আটটা থেকে আগামী ৩ জুলাই সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত তিন দিনে মোট ৯৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত গোয়াইন নদীর (গোয়াইনঘাট পয়েন্ট) পানি বিপৎসীমার .৭৫ মিটার নিচ দিয়ে (বিপৎসীমা ১০.৮২ মিটার, প্রবহমান ১০.০৭ মিটার) পিয়াইন নদীর (জাফলং পয়েন্ট) পানি বিপৎসীমার এক মিটার নিচ দিয়ে (বিপৎসীমা ১৩.০০ মিটার, প্রবহমান ১২.০০ মিটার) ও সারি নদীর (সারিঘাট পয়েন্ট) পানি বিপৎসীমার এক দশমিক ০৫ মিটার (বিপৎসীমা ১২.৩৫ মিটার, প্রবহমান ১১.৩০ মিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
নদ-নদীর পানি দ্রæত বৃদ্ধি পাওয়া এবং আগামী কিছুদিন ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস থাকায় উপজেলায় পুনরায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় মানুষের জান মাল রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে ৫৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও প্লাবন প্রবন এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে জনগণকে দ্রæত অবস্থান নিতে মাইকিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মোট ৪৭টি নৌকা মাঝিসহ প্রস্তুত রয়েছ উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকেরা বন্যার্তদের সহযোগিতায় সব সময় মাঠে রয়েছে।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে এবং মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলাবাসীকে আগে থেকেই সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি। এ ছাড়া যে সব ঘর-বাড়িতে বন্যার পানি ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে সেগুলোর বাসিন্দাদের সময় নষ্ট না করে এখনই নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার আহŸান জানানো হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। এ সংক্রান্ত সব কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে প্রতিটি ইউনিয়নে ১ জন করে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।