মালয়েশিয়ায় প্রতারণার শিকার ৭৩৩ বাংলাদেশি শ্রমিক পাচ্ছেন আড়াই কোটি টাকা

11

কাজির বাজার ডেস্ক

মালয়েশিয়ার জোহরবারুতে প্রতারিত হওয়া ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে তাদের পাওনা বেতন বাবদ আড়াই কোটি টাকার বেশি প্রদান করা হবে। দেশটির শ্রম বিভাগ জানিয়েছে মোট অপরিশোধিত বেতনের পরিমাণ ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৫৭ বাথ; যা বাংলাদেশি অর্থে আড়াই কোটি টাকারও বেশি।
মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জোহর শ্রম অধিদফতর এখন নিয়োগকর্তাকে দায়রা আদালতে এনে শ্রম আদালতের জারি করা আদেশ কার্যকর করবে।
ফেব্রæয়ারিতে জোহরবারুতে ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের খোঁজ মেলে। তাদের প্রায় ৪ মাস ধরে বিনাবেতনে কাজ করানো হচ্ছিল এবং প্রতিশ্রæতি মতো কাজও দেওয়া হয়নি। এর আগে গত ৫ ফেব্রæয়ারি জোহর শ্রম অধিদফতর এ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার জন্য ৪৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল; কিন্তু সেই সময়ে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি বিশেষ ‘নিয়োগকর্তা পরিবর্তন প্রক্রিয়া’-এর মাধ্যমে ৬৯২ জন ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি কর্মীকে এরই মধ্যে নতুন কর্মস্থলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মানব পাচারকারী সিন্ডিকেট শনাক্ত: মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ একটি মানব পাচারকারী সিন্ডিকেট শনাক্ত করেছে; যা বাংলাদেশি অনথিভুক্ত অভিবাসীদের ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ড এবং তারপর নৌকায় করে মালয়েশিয়ায় আনার জন্য ২১, ০০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত আদায় করেছে। শনিবার দেশটির সিনার হারিয়ানে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ইমিগ্রেশন ডিরেক্টর-জেনারেল রুসলিন জুসোহ জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুরে জালান সুলতান ইসমাইলের একটি বাসভবনে অভিযান চালিয়ে সিন্ডিকেটটি শনাক্ত করা হয়।
আসছে সোবহানের লাশ: অবশেষে সরকারি খরচে দেশে আসছে মালয়েশিয়া প্রবাসী আবদুল সোবহানের লাশ। রোববার লাশ বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৮৭ ফ্লাইটে আসছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে লাশ গ্রহণ করবেন মরহুমের ছেলে সাগর।
সোবহান ১৭ মার্চ চিকিৎসারত অবস্থায় মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে মারা যান। মালয়েশিয়ার পেরাক রাজ্যের ইপোহ শহরের রাজা মনজিৎ সিং ইপোহ হাসপাতাল মর্গে প্রায় দুই মাস পড়েছিল লাশ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ হাইকমিশনকে মৃত্যুর খবর জানালে হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ নেয় হাইকমিশন। সোবহান কুমিল্লা জেলার নুরের জামানের ছেলে।
এদিকে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ একটি মানবপাচারকারী সিন্ডিকেট শনাক্ত করেছে। যা বাংলাদেশী অনথিভুক্ত অভিবাসীদের ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ড এবং তারপর নৌকায় করে মালয়েশিয়ায় আনার জন্য ২১, ০০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত আদায় করেছে।
শনিবার দেশটির সিনার হারিয়ানে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ইমিগ্রেশন ডিরেক্টর-জেনারেল রুসলিন জুসোহ জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার, কুয়ালালামপুরে জালান সুলতান ইসমাইলের একটি বাসভবনে অভিযান চালিয়ে সিন্ডিকেটটি শনাক্ত করা হয়।
পরিচালক বলেন, পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন সদর দফতরের গোয়েন্দা ও বিশেষ অভিযান বিভাগের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭.০২ মিনিটের অভিযানে একটি গাড়িতে থাকা এক বাংলাদেশি ব্যক্তিকে আটক করা হয়, যে একটি পার্কিং এলাকা থেকে দ্রæত গতিতে পালানোর চেষ্টা করেছিল।
রুসলিন বলেন, ৩৩ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন পরিবহনকারী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার সঙ্গে গাড়িতে থাকা অনথিভুক্ত দুই বাংলাদেশীকে আটক করা হয়েছে।
গাড়ি থেকে আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিওিতে একটি বাসভবনে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বৈধ ভ্রমণ নথি বা পাস ছাড়া আরও পাঁচ বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করা হয়।
রুসলিন বলেন, অভিযানকারী দল ১০টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, তিনটি মোবাইল ফোন, নগদ ৫০০ রিঙ্গিত এবং অভিবাসীদের পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পেরোডুয়া মাইভি জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের কাজ ছিল এখানে কর্মসংস্থান খুঁজছেন এমন নথিভুক্ত অভিবাসীদের আকাশপথে ভিয়েতনামে এবং তারপর স্থলপথে থাইল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া। তারপর থাইল্যান্ড থেকে নৌকায় করে তাদের কেলান্তানে আনা হয়। ট্রান্সপোর্টার তারপর তাদের কুয়ালালামপুরের বাসভবনে নিয়ে আসা হয়।
রুসলিন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে, সিন্ডিকেটটি দুই মাস ধরে কাজ করছে। পরিবহণকারীকে ব্যক্তি পাচার বিরোধী এবং অভিবাসী আইন ২০০৭-এর ধারা ২৬-এ এর অধীনে তদন্ত করা হচ্ছে। আটক ২১ থেকে ৩৮ বছর বয়সী অভিবাসীদের অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩, পাসপোর্ট আইন ১৯৬৬ এবং অভিবাসন বিধিমালা ১৯৬৩ এর অধীনে তদন্তের স্বার্থে আটকদের পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে।