দীর্ঘ যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে হামাস

2

কাজির বাজার ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তৎপরতার মধ্যেই সেখানে দীর্ঘমেয়াদে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। ইসলামপন্থি এই সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীটির সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবেইদা এ ঘোষণা দেন। শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় আবু উবেইদা বলেন, আমাদের জনগণের ওপর গত কয়েক মাস ধরে যে নির্মম আগ্রাসন চলছে, তা বন্ধের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। এবং একইসঙ্গে শত্রæদের সঙ্গে গাজায় দীর্ঘমেয়াদে লড়াই চালিয়ে যেতেও আমরা প্রস্তুত। ভিডিও বার্তায় আল-কাসেম ব্রিগেডের এই মুখপাত্র দাবি করেন, গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে ব্যাপক বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করছে। ইতোমধ্যে ইসরাইলি বাহিনীর যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি সাধনেও সফল হয়েছে তারা। কিন্তু ইসরাইলি বাহিনী নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য প্রকাশ করছে না। প্রায় দু’সপ্তাহ আগে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় অভিযান শুরু করেছে আইডিএফ।
ভিডিও বার্তায় এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ১০ দিনে পুরো গাজা উপত্যকায় অন্তত ১০০ ইসরাইলি সামরিক সাঁজোয়া যানকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে আল-কাসেম ব্রিগেডের যোদ্ধারা। রাফা শহরে আমাদের যোদ্ধাদের সঙ্গে আগ্রাসনকারী বাহিনীর তীব্র লড়াই হচ্ছে এবং শহরের পূর্বাঞ্চলে শত্রæরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। এদিকে, ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ার সরু গলিপথগুলোতে হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরাইলি বাহিনীর তীব্র লড়াই হচ্ছে। আর দক্ষিণে রাফার চারপাশে জড়ো হওয়া ইসরাইলি ট্যাংকগুলোতে হামাসের যোদ্ধারা হামলা চালিয়েছে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গাজার ঐতিহাসিক আটটি শরণার্থী শিবিরের মধ্যে বৃহত্তম জাবালিয়ার কেন্দ্রস্থলের বাজার এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর সাঁজোয়া বহর ঢুকে পড়েছে, তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে বুলডোজারগুলো বাড়ি, দোকানসহ যা পড়ছে সব গুড়িয়ে দিচ্ছে। ভিডিও কলে পশ্চিম জাবালিয়ার বাসিন্দা আয়মান রজব রয়টার্সকে বলেন, বিমান ও ট্যাংকগুলো আবাসিক এলাকা, মার্কেট, দোকান, রেস্তোরাঁসহ সবকিছু গুড়িয়ে দিচ্ছে। ইসরাইল জানিয়েছিল, গাজা যুদ্ধের প্রথমদিকেই তাদের বাহিনী জাবালিয়া পরিষ্কার করে ফেলেছিল, কিন্তু হামাসের যোদ্ধাদের ফের সংঘটিত হওয়ার প্রচেষ্টা রুখে দিতে গত সপ্তাহে আবার তাদের বাহিনী সেখানে ফিরেছে।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে তাদের সেনারা জাবালিয়ায় ৬০ জনেরও বেশি হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং একটি ‘ডিভিশনাল পর্যায়ের অভিযানে’ অস্ত্র গুদাম খুঁজে পেয়েছে। ডিভিশনাল পর্যায়ের অভিযানে সাধারণত কয়েক হাজার সেনা সম্বলিত বেশ কয়েকটি ব্রিগেড অংশ নিয়ে থাকে, তাতে এটি গাজা যুদ্ধের অন্যতম বৃহত্তম অভিযানের রূপ নিয়েছে। আইডিএফ বলেছে, ৭ম ব্রিগেডের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র বহু বিমান হামলা পরিচালনা করেছে, এতে শত্রæরা ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি তাদের অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
মিশরের সীমান্তবর্তী রাফার আকাশে ঘন ধোঁয়ার কুÐুলী উঠছিল। এখানে বাড়তে থাকা ইসরাইলি হামলার কারণে শহরটি থেকে কয়েক লাখ মানুষ পালিয়ে গেছে। গাজার অপেক্ষাকৃত নিরাপদ শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল রাফা। জেনিভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র জিনস লার্কে বলেছেন, লোকজন আতঙ্কিত হয়ে আছে আর পালানোর চেষ্টা করছে।