স্টাফ রিপোর্টার
সিলেট নগরী ও আশপাশের বেশ কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টির সাথে হিমেল হাওয়া শুরু হয়েছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এই শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এর স্থায়ীত্ব ছিলো ২ থেকে ৩ মিনিট। শিলাবৃষ্টি শুরুর সাথে সাথে নগরীর সবগুলো রাস্তাঘাট মুহুর্তেই প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়।
জানা যায়, সোমবার সকাল থেকে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকে। তবে বিকেলের দিকে থেমে থেমে আবারও বৃষ্টি শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। এর স্থায়ীত্ব ছিলো ২ থেকে ৩ মিনিট। ফলে সিলেট নগরীর প্রায় সড়ক ফাঁকা দেখা যায়। সেই সঙ্গে হঠাৎ করে শিলা পড়ায় জনমনে বিরাজ করছে আতঙ্ক।
এদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ২.২ মিলিমিটার। সেখানে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করা হয় ৫২ মিলিমিটার। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৭ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক নিবাস দেবনাথ।
তিনি জানান, সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৫৯ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। তন্মধ্যে সকাল ৬টা থেকে ৯ টায় ২৮ মিলিমিটার ও সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যমতে, ১০ মিলিমিটার পর্যন্ত হালকা বৃষ্টিপাত, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টিপাত, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার পর্যন্ত মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার ভারী এবং এর বেশি বৃষ্টি হলে তাকে অতিভারী বৃষ্টিপাত বলা হয়।
এরআগে গত ৪ এপ্রিল ও ৩১ মার্চ সিলেটে হঠাৎ কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। ওই সময়ে শিলাখÐের আঘাতে নগরীর টিনসেটের অনেক বাসাবাড়ি চালের টিন ছিদ্র হয়ে যায় ও জানালার কাচ ভেঙে যায়। যানবাহনেরও বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়।
জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে চলেছে। এতে গাছের শাখা-প্রশাখা ভেঙে পড়েছে, কোথাও বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়েছে। ফলে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ঘর-বাড়ির টিনের চাল উড়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন মানুষজন।
এদিকে, সুনামগঞ্জের সুরমা, কুশিয়ারাসহ সকল নদ-নদীর পানি দ্রæত গতিতে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ সকল নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও এ সময় সুনামগঞ্জে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার।
তিনি বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে এই জেলার সুরমা, রক্তি, যাদুকাটাসহ সকল নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, এই মুহ‚র্তে সুনামগঞ্জে বড় ধরনের বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। কারণ এখনো সুনামগঞ্জে যেসব হাওর রয়েছে সেখানে পানি প্রবেশ করেনি।
এদিকে দ্রæত গতিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে আছেন সুনামগঞ্জের ২৫ লাখ মানুষ। কারণ ২০২২ সালে এই ভাটির জেলায় যে বন্যা সৃষ্টি হয়েছিল সেটার ক্ষত এখনও ভোলেননি এই অঞ্চলের মানুষ।