চলতি শিক্ষাবর্ষে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বিনামূল্যের পাঠ্যবই অনেক শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছেছিল বেশ দেরিতে। নিম্নানের কাগজে ছাপা অনুজ্জ্বল বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল এনসিটিবি। এ প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট সবাই আশা করেছিল, প্রতিষ্ঠানটি আগামী দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে মানসম্মত বই সময়মতো পৌঁছাতে সক্ষম হবে। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি মাত্র কয়েকদিন। বছরের প্রথম দিন নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে অধীর অপেক্ষায় আছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের কোটি কোটি শিক্ষার্থী। বইয়ের জন্য কৌত‚হলী শিক্ষার্থীরা প্রতীক্ষায় থাকলেও নতুন শিক্ষাবর্ষে সময়মতো বই প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষে অষ্টম ও নবম এ দুই শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হচ্ছে। গত সোমবার অষ্টম ও নবম শ্রেণির বিজ্ঞানের অনুসন্ধানী ও অনুশীলন এবং ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের মোট ৬টি বইয়ের পাÐুলিপি হাতে পেয়েছে এনসিটিবি। এসব বই জানুয়ারির আগে ছাপা শুরু করা সম্ভব নয়। জানা যায়, অষ্টম ও নবম শ্রেণির অন্য প্রায় ৬০ ভাগ বই মুদ্রণের কাজ শুরুই হয়নি। এখন পর্যন্ত সব শ্রেণির বইয়ের মুদ্রণ চুক্তি শেষ করতে পারেনি এনসিটিবি। ১ জানুয়ারি উৎসবের মাধ্যমে বই বিতরণ করা হলেও দেশের সব শিক্ষার্থীর পাঠ্যক্রম অনুযায়ী তাদের হাতে সব বই তুলে দিতে সময় লাগবে এক মাসের বেশি।
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকের বই ছাপানোর কাজ আগে শুরু করায় মাধ্যমিকের বই ছাপাতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। জানা যায়, মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রাথমিকে নতুন কারিকুলামের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির প্রায় এক কোটির মতো বই এখনো সরবরাহ করা হয়নি। ছাপাখানার মালিক ও কর্মীরা জানান, বই ছাপার ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ৫০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে চুক্তি করে এনসিটিবি। অথচ এ বছরের বাকি আছে মাত্র কয়েকদিন। মানসম্মত ও নির্ভুল পাঠ্যবই প্রণয়ন যেন এক অসাধ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষকে মনে রাখতে হবে, মানসম্মত ও ত্রæটিমুক্ত বই সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব না হলে তাদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের কাজে জটিলতা সৃষ্টি হবে। টেন্ডার, কাজের চুক্তি, বিল পরিশোধ এসব বিষয়ে যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও যতœশীল হতে হবে। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এনসিটিবির পাঠ্যপুস্তক প্রকল্পকে ত্রæটি ও দুর্নীতিমুক্ত করার পদক্ষেপও নিতে হবে।