স্টাফ রিপোর্টার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক বেশি ভোট পড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এতে করেই নির্বাচনে গ্রহণযোগ্যতা আসবে বলে মনে করেন তিনি। মনোনয়ন জমা দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় উপরোক্ত কথাগুলো বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সিলেট-১ আসন: এর আগে নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে মনোনয়ন জমা দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বুধবার সিলেটের জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে দলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন। পরে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এবারের নির্বাচনে অনেক ভোট পড়বে, তাতেই নির্বাচনে গ্রহণযোগ্যতা আসবে। কে আসলো না আসলো সেটা বিষয় না, জনগণ সাথে আছে কি না সেটাই দেখার বিষয়। বিএনপির আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনের নমুনা হল, রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে আগুন জ্বালানো। এতে নির্বাচনে কোন প্রভাব পড়বে না। সারাদেশে এখন নির্বাচনী উৎসব শুরু হয়েছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মানুষ শান্তি ও উন্নয়ন চায়। শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চান। তিনি বলেন, উন্নয়ন শান্তি ও স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখতে মানুষ উৎসব মুখর পরিবেশে পরিবার পরিজন নিয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং নৌকায় ভোট দেবেন। তাই তিনি দেশের মানুষকে নির্বিঘেœ উৎসমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে আসার আহবান জানান।
নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি প্রচুর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। আরও অনেক কিছু করার আছে। অনেক প্রকল্পের কাজ চলছে। সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সিলেটবাসী অতীতের মতো আবারও আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তিনি আরও বলেন, সিলেটবাসীর ভালোবাসায় আমি ধন্য। তারা অতীতে আমাকে ভোট দিয়েছেন। আবারও আমাকে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে পাঠাবেন। সিলেট বিভাগজুড়ে নৌকার অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, নৌকাই জয়ী হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বা দিচ্ছেন। দলের জন্য তারা ত্যাগ স্বীকার করে তাদের সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবেন বলেই আমি মনে করি। তারা আবার নৌকার প্রার্থীদের জয় নিশ্চিতে নির্বাচনী মাঠ থাকবেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিচ্ছিন্ন দু’একটা ঘটনা ছাড়া সারাদেশে দারুণ নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। কোথাও কোনো সমস্যা নেই। যারা নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন, তাদের প্রতি আমার আহŸান, সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নির্বাচনে আসুন। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগ বদ্ধপরিকর। এর পরই তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান এবং নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা।
জগন্নাথপুর থেকে মো. শাহজাহান মিয়া জানান : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চতুর্থ বারের মতো সুনামগঞ্জ-৩ আসনে (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আওয়ামীলীগের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। বুধবার দুপুরে সহকারী রিটার্নিং অফিসার জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাজেদুল ইসলামের কাছে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা সিদ্দিক আহমদ, জগন্নাথপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, মন্ত্রীপুত্র সাহদাত মান্নান অভি, জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভ‚ঞা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মজিবুর রহমান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আবদুর রব সরকার, শান্তিগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সীতাংশু শেখর সিতু, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসাইন ও জগন্নাথপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু প্রমূখ।
এদিকে-মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে দলীয় কার্যালয়ে কর্মীসভায় ও দাখিল শেষে অনুভ‚তি প্রকাশ করে জনতার উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আমি ইমানের সহিত সৎভাবে জনসেবা করতে চাই। বিগত ১৫ বছরে যে উন্নয়ন করেছি, জনগণ তা জানেন। আরো অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। তা সমাপ্ত করতে চাই। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আস্থা রেখে আমাকে নৌকা দিয়ে নির্বাচনে পাঠিয়েছেন। আপনারা নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখুন। কারণ বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন চায়। আমরাও উন্নয়ন কাজ করতে চাই। তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, হিংসা-বিদ্বেষ ভ‚লে নির্বাচনে আসুন। না হলে দেশ ও মানুষের ক্ষতি করবেন না। নাশকতামূলক কাজ কাম্য নয়।
এ সময় জগন্নাথপুর উপজেলা আ.লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আনহার মিয়া, আবদুল কাইয়ূম মশাহিদ, যুগ্ম-সম্পাদক ও সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসান, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক লুৎফুর রহমান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নুরুল হক, আ.লীগ নেতা আকমল খান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন লালন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খানম সাথী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাফরোজ ইসলাম মুন্না, সাবেক ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়র শফিকুল হক, উপজেলার মিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরিন, আশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ূব খান, রাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ছদরুল ইসলাম, পাটলি ইউপি চেয়ারম্যান আংগুর মিয়া, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল, পাইলগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মখলিছ মিয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মুকিত, সাধারণ সম্পাদক তাহা আহামদ, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান আদিল সহ দলীয় নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মন্ত্রীকে রাণীগঞ্জ সেতু থেকে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা সহকারে আনন্দ মিছিলের মাধ্যমে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে নিয়ে আসা হয়। এতে জগন্নাথপুর পৌরসভা ও উপজেলার সকল ইউনিয়ন থেকে আসা দলীয় নেতাকর্মী সহ হাজারো জনতা অংশ গ্রহণ করেন।
হবিগঞ্জ-৪ আসন: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য হবিগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় মাধবপুর উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার মনজুর আহসানের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল করেন এডভোকেট মাহবুব আলী।
জমাদান শেষে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে উপজেলা চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী অসীম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোঃ মুসলিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর নূর, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রহম আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, হবিগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের সাবেক পিপি এডভোকেট ফজলে আলী। এডভোকেট মাহবুব আলী গত ২ মেয়াদে হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর -চুনারুঘাট) আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।