সৈকত মাহাবুব, শাবি থেকে
জার্মানির বিখ্যাত গাড়িা যন্ত্রাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান (ইড়ংপয) এর ডিপ লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ পেলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) ইমদাদুল হক মিলন।
তিনি শাবির গণিত বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী। গণিতে স্নাতক করার পাশাপাশি তিনি কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ নিজের সেকেন্ড মেজর সম্পন্ন করে পাড়ি জমান ওয়েলসের কার্ডিফে। কার্ডিফ মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি থেকে ২০২১ সালে ডাটা সাইন্সে ¯œাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ইমদাদুল হক মিলন সদ্য যোগ দিয়েছেন জার্মানের বিশ্ববিখ্যাত গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইড়ংপয এ। যেটি মোবিলিটি সলিউশন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি, কনজিউমার গুডস এবং এনার্জি অ্যান্ড বিল্ডিং টেকনোলজির ক্ষেত্রে প্রযুক্তি পরিষেবার শীর্ষস্থানীয় একটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এর বাইরেও ইড়ংপয এর এন্ড-টু-এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তি সমাধানের জন্য জার্মানির বাইরে ভারতে সবচেয়ে বড় উন্নয়ন কেন্দ্র রয়েছে।
পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার বিষয়ে তার কথা হয় কাজিরবাজারের সঙ্গে। শাবিপ্রবির গণিত বিভাগ থেকে কিভাবে জার্মানির মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে যোগদান করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শাবির গণিত বিভাগে প্রতি সেমিস্টারে প্রোগ্রামিং সম্পর্কিত বিভিন্ন কোর্স থাকে যা প্রোগ্রামিং শুরু করার জন্য সাহায্য করে। এছাড়াও সেকেন্ড মেজর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং থাকায় প্রোগ্রামিং এর প্রাথমিক ধারণা পেয়েছিলাম। প্রথম ও দ্বিতীয় দুই মেজরেই ফাইনাল ইয়ার্স থিসিস মেশিন লার্নিং সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে করি যা মেশিন লার্নিং এর প্রাথমিক বিষয়গুলো শিখতে সহায়তা করে এবং এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী করে তুলে।’
বিদেশে উচ্চ শিক্ষা বিষয়ে তিনি বলেন, ডাটা সাইন্স এ মাস্টার্স করার সিদ্ধান্ত নিয়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমাই। সেখানে মাস্টার্স এর পাশাপাশি কম্পিউটার ভিশন এবং মেশিন লার্নিং এ রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট হিসেবে যোগদান করি। রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট থাকাকালীন অনেক রিয়েল ওয়ার্ল্ড ভিশন প্রবেøমস নিয়ে কাজ করার সুযোগ হয়। সেখান থেকে পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের স্টার্টআপ অমরষব করহবঃরপ খরসরঃবফ এ মেশিন লার্নিং সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করার সুযোগ আসে। এসব কাজ করার সময় সেলফ-ড্রাইভিং কার এর প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে। কিন্তু এই বিভাগটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি তাই ক্লাসিকাল কম্পিউটার ভিশন, ডিপ লার্নিং, হার্ডওয়্যার নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়।
মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানিতে কিভাবে চাকরি পেলেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইড়ংপয এ আবেদন করার পর প্রাথমিক ভাবে ইন্টারভিউ এর জন্য নির্বাচন করে। এরপর তিন ধাপে ইন্টারভিউ হয় এবং প্রতিটা ধাপের মাঝে ৭-১০ দিন সময় পাওয়া যায়। ইন্টারভিউ এর পরে ডিপ লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার পজিশন পদে নিয়োগের জন্য ডাকা হয়। মূলত এখানে অটোনোমাস ড্রাইভিং এর বিভিন্ন প্রবেøম নিয়ে কাজ করতে হয়। তার প্রথম প্রজেক্ট গুলোর মধ্যে ইমার্জেন্সি ব্রেকিং সিস্টেম, স্মার্ট পার্কিং সিস্টেম, অ্যাডভান্সড ড্রাইভিং অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেম অন্যতম।
চাকরির অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, অনেকের ধারণা থাকে এসব ফিল্ড এ কাজ করতে কম্পিউটার সাইন্স এ পড়াশোনা করা জরুরি। তবে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান পড়েও মেশিন লার্নিং সর্ম্পকিত কাজ করা যায়। যেমন গণিত বিভাগে পড়ার কারণে তার মেশিন লার্নিং বা কম্পিউটার ভিশন এর সমস্যাগুলো বুঝতে সুবিধা হয়। তাই আগ্রহী হলে গণিত বা অন্যান্য বিভাগ থেকেও এই সুযোগ গুলোকে কাজে লাগানো উচিত।