কুমারী পূজায় হবিগঞ্জে দর্শণার্থীদের ভীড়

7

 

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা

ধর্মীয় রীতিনীতি ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে হবিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন ও সেবাশ্রম, বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজার সার্বজনীন দূর্গাপূজা ও জয়পুর শচী অঙ্গন ধামে কুমারী পুজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার রামকৃষ্ণ মিশনে সকাল ১০ টায়, মিরপুর বাজার সার্বজনীন দূর্গাপূজা ও জয়পুর শচী অঙ্গন ধামে সকাল ১১ টায় এ কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এর পূর্বে পূজা শুরুর আগে কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। হাতে দেওয়া হয় ফুল, কপালে সিঁদুরের তিলক ও পায়ে আলতা। যথাসময়ে সজ্জিত আসনে বসিয়ে পূজা করা হয় কুমারী মাকে। এসময় শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মায়ের স্তুতিতে মুখরিত হয় চারদিক। দূর্গাপুজার মহাঅষ্টমীর দিন প্রতি বছর ৫ থেকে ১২ বছরে বয়সী কিশোরীকে দেবীরুপে পূজা করা হয়।
জানা গেছে, এবার শহরের রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজায় পুঁজিত হয়েছেন বি-বাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার মলাইশ গ্রামের অনুপ চক্রবর্তী বিপ্লব ও অনীতা চক্রবর্তীর কন্যা আবৃতি চক্রবর্তী (৭)। সে স্থানীয় বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেনীর ছাত্রী। তাঁর শাস্ত্রীয় নাম মালিনী কুমারী। এদিকে, মিরপুর বাজার সার্বজনীন দূর্গাপূজায় ১ম বারের মত কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়। এ পূজায় পূজিত হয় অপরুপা চক্রবর্তী (৬) নামে এক কন্যা শিশু। জাঁকজমক পূর্ণভাবেপূজা হয়েছে জয়পুর শচী অঙ্গন ধামেও। কুমারী পূজাকে ঘিরে মন্ডপসহ আশপাশের এলাকা রুপ নেয় উৎসবের আমেজ।
হবিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন ও সেবাশ্রম অধ্যক্ষ স্বামী বেদময়ানন্দ জানান, কুমারি পূজার অর্থ হলো নারী শক্তিকে পূজা করা, মায়ের রূপকে পূজা করা। আমাদের মাঝে যত কাম, ক্রোদ, লোভ, লালসা দুর করে অসুরের বিনাশ ও পবিত্র মানুষদের রক্ষা করেন মায়ের কাছে এই প্রার্থনা করি। তিনি বলেন, কুমারী পূজা উপলক্ষে রামকৃষ্ণ মিশনে হবিগঞ্জ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে শত-শত নারী পুরুষ এখানে এসেছে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মিরপুর বাজার সার্বজনীন দূর্গাপূজার আয়োজক নিরঞ্জন সাহা নিরু জানান, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিরপুর বাজার সার্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপে কুমারী পূজায় বাহুবল, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এসেছে।
এদিকে, কুমারী পূজা উপলক্ষে জেলাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি মাঠে থাকে র‌্যাব-আনসার সদস্যরা। এছাড়াও মন্ডপ এলাকা যানজটমুক্ত রাখতে নেওয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। মন্ডপ গুলোতে সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি বাড়ানো হয় সাদা পোষাকদারি পুলিশের নজরদারি।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত রফিকুল ইসলাম জানান, শুধু কুমারী পূজা নয় পুরো পূজার আয়োজনে নির্বিঘেœ করতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশী টহল ছাড়াও সাদা পোষাকে নজরদারি রয়েছে সার্বক্ষণিক।