স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে শিশুসহ ৩ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ও সোমবার রাতে পৃথক স্থানে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে দুই যুবকের আত্মহত্যা ও এক শিশুর জলাশয়ে ডুবে মৃত্যু হয়।
দোয়ারাবাজার: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় মোঃ ফয়সাল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সে উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পলিরচর গ্রামের সমর আলীর ছেলে। সোমবার রাতে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, নিহত ফয়সাল ইসলামের স্ত্রী হালিমা আক্তার বেশ কিছুদিন ধরে সৌদি আরব প্রবাসে থাকে। নিহত ফয়সাল ইসলামের প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের সাথে ফয়সালের স্ত্রী প্রবাসী হালিমা আক্তারের মোবাইল ফোনে কথাবার্তা বলার এক পর্যায়ে প্রেমের সর্ম্পক গড়িয়া উঠে। ওই প্রেমের সর্ম্পকের কারণে ফয়সাল ও রবিউলের সম্প্রতি বিভিন্ন সময়ে ঝগড়া-বিবাধ হয়। এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ ও স্থানীয় গন্যমান্য লোকজন একাধিকবার বিচার-সালিশ করেছেন। সোমবার সকালে ফয়সাল তার প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের আধাপাঁকা টিনসেড বসত ঘরের বারান্দায় তীরের সাথে গামছা পেছিয়ে আত্মহত্যা করে বলে থানায় খবর দেন স্থানীয়রা। থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফয়সলের লাশ উদ্ধার করে।
নিহত ফয়সাল আহমেদের মা আয়শা খাতুন বলেন, তিনি সকালে ফজরের নামাজ শেষে ঘরের বাহিরে যাওয়ার পর এলাকার ৪ জন বললো তার ছেলে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। আমার ধারনা, ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
হবিগঞ্জ:
হবিগঞ্জ শহরের মাহমুদাবাদ থেকে সামছুল হক (১৯) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার রাত ১১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। মৃত সামছুল হক বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া গ্রামের আনফর উল্লাহর পুত্র। সামছুল হক মাহমুদাবাদ এলাকার শাহজালাল মসজিদ সংলগ্ন মা লেডিস টেইলার্সে কর্মরত ছিল বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেলে খাওয়া দাওয়া করার জন্য মা লেডিস টেইলার্স থেকে বাসায় যায় সামছুল হক। পরে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে আসলেও তার কোন খোঁজ নেই। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব জানান, কি কারণে ওই যুবক আত্মহত্যা করেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে।
শায়েস্তাগঞ্জ:
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার উবাহাটা এলাকায় জলাশয়ে ডুবে রবিউল হাসনাইন নিয়াদ (২) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মৃত নিয়াদ ওই এলাকার রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী রেদুয়ান ইসলাম মুন্নার ছেলে।
শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মোঃ তাহির খান জানান, সকাল থেকে নিয়াদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে সকাল ১১টার দিকে বাড়ির পাশের একটি জলাশয় থেকে শিশুটিকে নিথর অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। দ্রæত নিয়াদকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক কামাল জানান, পরিবারের লোকজনের অগোচরে জলাশয়ে ডুবে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।