শাবির সাংস্কৃতিক অঙ্গন : কাটছে না স্থবিরতা, কমে গেছে কর্মতৎপরতা

30

সৈকত মাহাবুব, শাবি থেকে
সাংস্কৃতিক অঙ্গনে স্থবিরতা কাটিয়ে উঠতে সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী, সাংস্কৃতিক, ক্যরিয়ার ভিত্তিক, বিজ্ঞান বিষয়ক ও অন্যান্য সংগঠনগুলো নতুন সদস্য সংগ্রহ করেছে। তবে নতুন সদস্য সংগ্রহ করলেও সদস্যদের ইন্টারভিউ কিংবা নবীণ বরণ দেয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সক্রিয় হতে পারছে না সংগঠনগুলো। ক্লাস-পরীক্ষার ব্যস্ততা, ব্যক্তিগত ব্যস্ততা, সহশিক্ষা কার্যক্রমে অনীহা, অনুক‚ল পরিবেশের অভাবসহ বিভিন্ন বিষয়কে দায়ী করছেন অনেক সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
জানা যায়, বছরব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে, কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে কবিতা পাঠ, মঞ্চ নাটক, সাহিত্য পাঠ, নাচ-গানে মুখরিত থাকতো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কিন্তু ক্রমেই তা যেন কমে আসছে ক্যাম্পাসটিতে। সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চর্চার পাশাপাশি আড্ডা, গান, কবিতা, নাটকসহ নানা কার্যক্রমে মুখর থাকতো এ বিশ^বিদ্যালয়। তাছাড়া কনসার্ট, নাটক, সিনেমা প্রদর্শনী, চ্যারিটি আয়োজনসহ নানা বিষয় ছিলো চোখে পড়ার মতো। তবে তা এখন একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে। তেমন কোন সংগঠনের কোন কার্যক্রমই চোখে পড়ে না। নেই সে আড্ডা, গল্প, সম্মিলিত কন্ঠে গান, এক কিলো ধরে আড্ডা দিতে দিতে স্মৃতিচারণ।
একাধিক সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি বড় পরিবর্তন এসেছে। যে পরিবর্তনটি স্থবিরতা নিয়ে এসেছে, যা মোটেও সুখকর নয়। এতে শিক্ষার্থীরা নিজেকে আবিষ্কারের চেষ্টা কম করছেন। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম, শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট আসক্তি কিংবা অন্য কাজে সময় অতিবাহিত করছেন বেশি। ক্লাস-পরীক্ষা, ল্যাব, অ্যাসাইনমেন্টের চাপ তো আছেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলো করোনাকালীন সেশনজট কাটাতে তাড়াতাড়ি করে ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করতে চাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী সময় কম পাচ্ছে এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে বিমুখ হচ্ছে।
বিশ^বিদ্যালয়ের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদ্য সাবেক আহবায়ক শাহরিয়া আফরিন প্রকৃতি বলেন, আগে সকল বিভাগের পরীক্ষা একসাথে শুরু হয়ে এক মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যেত। কিন্তু বিভাগগুলো আলাদাভাবে পরীক্ষা শেষ করতে দুই-তিন মাস সময় লাগিয়ে দেয় যার ফলে শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে একত্রিত হয়ে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেনা। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় না।
বিশ^বিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ফজিলাতুন্নেসা বলেন, শিক্ষার্থীদের উচিত বিশুদ্ধ সাংস্কৃতিক চর্চা করা। কিন্তু, শিক্ষার্থীরা এখন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে আগ্রহী না। এর ফলে তাদের মাঝে দেখা দিতে পারে ইন্টারনেট আসক্তি, একাকিত্ব, হতাশাসহ নানা সমস্যা। এমনকি তারা মাদকাসক্তি ও নানা অপরাধমূলক র্কর্মকান্ডেও জড়িত হতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের উচিত সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদার জানান, এই বিষয়ে (স্থবিরতা) আমি জানিনা। আমি তো জানি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম খুব সুন্দরভাবে চলছে। সংগঠনগুলোকে কোনো আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয় কিনা হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন যা প্রয়োজন তা তাদেরকে (সংগঠনগুলোকে) দেয়া হচ্ছে।