শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফলদ গ্রাম দিলবরনগর গ্রামে নির্মিত সেতুটি দুই যুগ ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। নির্মাণের পর এখনও ব্যবহার হয়নি সেতুটি। সেতুটির দুই পাশে গাইডওয়াল, সংযোগ সড়ক ও মাটি ভরাট না হওয়ায় এটি নির্মাণের পর থেকেই অসম্পূর্ণ অবস্থায় পাহাড়ি ছড়ার ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। সংযোগহীন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির নিচ দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন আশপাশের চার গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ। সেতুর নিচ দিয়ে বহু কষ্টে ঠেলাগাড়ি চালিয়ে ওই এলাকায় উৎপাদিত ফলমূল ও ফসল নিয়ে বাজারে যান স্থানীয় চাষিরা। এলাকার জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্বিকার। জানা যায়, ১৯৯৯-২০০০ সালে উপজেলার ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত¡াবধানে সরকারি অর্থে পাহাড়ি ছড়ার ওপরে নির্মাণ করা হয় দিলবরনগর সেতুটি। গাইডওয়ালবিহীন সেতুটি নির্মাণের পর থেকে পেরিয়ে গেছে দুই যুগ। তবে এখনও সেটি সাধারণের কাজে আসার মতো অবস্থায় আসেনি। এ অবস্থায় এ সড়কে চলাচলকারী জেরিন চা বাগান, রাধানগর, দিলবরনগর ও ডলুছড়া গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ নানা দুর্ভোগ সয়ে নিয়ে চলাচল করছেন। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসী সেতুর নিচ ও ছড়ার পানির ওপর দিয়ে যাতায়াত করছেন। ঠেলাগাড়ি দিয়ে পানি পার হয়ে উৎপাদিত ফল বাজারে নিচ্ছেন বাগানের মালিকরা। পরিত্যক্ত এ সেতুটির উপরিভাগ ও আশপাশ ভরে গেছে জংলি লতাপাতায়।
ওই এলাকার বাগান মালিক শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে দিলবরনগর সেতুটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সরকারি অর্থব্যয়ে নির্মিত সেতুটির গাইডওয়াল ও সংযোগ সড়ক করা হয়নি। যে কারণে সেতুটি কোনো কাজে আসছে না।
দিলবরনগর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, তৎকালীন ৩ নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফজল হক জনদুর্ভোগ নিরসনে সেতুটি নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তীতে মাটি ভরাট ও গাইডওয়াল না থাকায় সেতুটি মানুষের কোনো কাজে আসেনি। এ অবস্থায় প্রায় ২৪ বছর ধরে পড়ে রয়েছে এটি। একই এলাকার মুসলিম মিয়া জানান, সে সময় দিলবরনগরে তিনটি সেতুর কাজ শুরু হয়। দুটি সেতু সম্পূর্ণভাবে নির্মাণ সম্পন্ন করা হলেও দিলবরনগর-ডলুছড়া গ্রাম্য সড়কের এই সেতুটি এই অবস্থায় পড়ে আছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী ইউসুফ হোসেন খান জানিয়েছিলেন চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে সেতুটির কাজ সম্পন্ন করা হবে। তবে সম্প্রতি এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য একাধিকবার তাঁর মোবাইল ফোনে কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় জানান, অপরিকল্পিতভাবে দিলবরনগর গ্রামের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েকবার চেষ্টা করেও সেতুটির কাজ সম্পন্ন করা যায়নি বরাদ্দ না পাওয়ার কারণে।
