সিলেটে দুই দফা সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ জামায়াতে ইসলামী

4

 

স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটে দুই দফা সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে আর নতুন কোন কর্মসূচি দেয়নি জামায়াতে ইসলামী। গত ১৫ জুলাই সিলেটে বিভাগীয় সমাবেশ করতে চেয়েছিল জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগর শাখা। ওইদিন পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় ফের ২১ জুলাইয়ে আরেকবার সমাবেশের ডাক দেয় তারা। কিন্তু নাশকতার আশঙ্কার কথা বলে দুইবারই ব্যর্থ হয়ে এবার নতুন কোন কর্মসূচি দেয়নি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানো দলটি।
শুক্রবার সিলেট নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে ১০ দফা দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ করার কথা ছিলো জামায়াত। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এবারও তারা সমাবেশে করতে পারেনি।
সমাবেশ করতে না পেরে শুক্রবার নিজেদের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জামায়াত। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, রেজিস্ট্রারি মাঠে ফের জনসভার অনুমতি না দেওয়ায় সিলেটবাসী গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আমরা বিস্মিত।
তিনি বলেন, দেশ জাতি আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। জাতির এই কঠিন সময়ে জামায়াত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে রয়েছে। নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ জামায়াত নেতৃবৃন্দ ও কারান্তরীণ আলেম-উলামাদের মুক্তি, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, ঘন ঘন লোডশেডিং, দফায় দফায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ, বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা ও পাচারকারীদের শাস্তি প্রদান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে সাংবাদিক দমন পীড়ন বন্ধ ও বন্ধ করে দেয়া ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসমূহ খুলে দেওয়াসহ জনসংশ্লিষ্ট ১০ দফা দাবিতে পুলিশ কর্তৃক দ্বিতীয়বারের মতো জামায়াতের জনসভায় অনুমতি না দেয়ার ঘটনায় সিলেটবাসী বিস্মিত।
তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আরেকবার প্রমাণ হলো দেশে নাগরিক অধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই বললেই চলে। এর মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন একদিকে তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। অপরদিকে তারা যে কর্তৃত্ববাদী সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে বিরোধী মতপ্রকাশে বাধার সৃষ্টি করছেন তা প্রমাণিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা সোহেল আহমদ, সিলেট জেলা দক্ষিণের নায়েবে আমির ও সাবেক দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, জেলা উত্তরের সেক্রেটারি ও সাবেক জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সিলেট মহানগর সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব ও ড. নুরুল ইসলাম বাবুল, সিলেট জেলা দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ও সাবেক গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজ নজমুল ইসলাম প্রমুখ।
সাম্প্রতিক সময়ের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিকে পুঁজি করে গত ১০ জুন ঢাকায় বড় সমাবেশ করে হঠাৎ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেওয়ার পরই সিলেটে বিভাগীয় সমাবেশ করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা চালাচ্ছিল জামায়াত। সিলেট রেজিস্টারি মাঠে বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ৫ জুলাই মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবরে লিখিত আবেদন করেন মহানগর জামায়াতের নেতৃবৃন্দ। তবে নাশকতার আশঙ্কায় ওই সমাবেশের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এবারও একই কারণ দেখিয়ে তাদেরকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
শুক্রবার সকাল থেকেই সিলেটের রেজিষ্টারী মাঠের আশপাশ এলাকাসহ মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়।